মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ নাগরিক সংগঠন গৌরব ’৭১ বীরমুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য লতিফ সিদ্দিকীর ওপর সাম্প্রতিক পরিকল্পিত মব আক্রমণের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, এটি শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধার ওপর আঘাত নয়; বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার ওপর “বর্বর আঘাত”।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে সংগঠনটি অভিযোগ করে, বর্তমান ইউনূস সরকারের সময় দেশে ভিন্নমতালম্বীদের জন্য পরিবেশ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে; মবসন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বিরোধী কণ্ঠস্বর দমনের ‘প্রধান হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মঞ্চ ৭১ এর বৈঠকে অবরোধ–হেনস্তার অভিযোগ
গৌরব ’৭১ জানায়, ঢাকায় মঞ্চ ৭১–এর বৈঠকের প্রাক্কালে মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করা হয় এবং ‘মিথ্যা অভিযোগ’ সাজিয়ে অন্যায়ভাবে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সংগঠনটির দাবি, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; সরকারের মদদপুষ্ট স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকারপন্থী শক্তির “সমগ্রিক ষড়যন্ত্রের” অংশ। তাদের ভাষ্যে, এ ধরনের ঘটনা বাকস্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য অশনিসংকেত।
সরকারের প্রতি অভিযোগ
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউনূস সরকারের আমলে সাংবাদিক, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও ছাত্র–জনতার কণ্ঠরোধের মাধ্যমে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ধ্বংস করে “রাজাকারপন্থী চক্রকে পুনর্বাসনের চেষ্টা” চলছে।
গৌরব ’৭১–এর চার দফা দাবি
১. ঘটনায় জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী, জামাত–শিবিরপন্থী মবচক্রকে অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে।
২. মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে কার্যকর রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ অবিলম্বে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৪. মবসন্ত্রাস ও রাজনৈতিক সন্ত্রাস দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে।
সংগঠনের অবস্থান
বিবৃতিতে গৌরব ’৭১ জানায়, “যে দেশবিরোধী অশুভ শক্তি মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করে, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয় ও গণতন্ত্র ধ্বংস করে—তাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সর্বস্তরে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তারা বাংলার মাটিতে কোনোদিনও স্থান পাবে না।”