আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা ও বিশেষায়িত বাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলেছে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংগঠনটির নেতারা।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত 'ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়। সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।
তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে এলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নানা ধরনের হুমকি ও সহিংসতার ঘটনা বাড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিদ্বেষ ছড়ানো—এসব কারণে সংখ্যালঘু পরিবারগুলো ভয় ও আতঙ্কে থাকে। বিশেষ করে গ্রাম ও মফস্বলে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের জন্য এই সময়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।
সভায় মোট ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
* নির্বাচনে ধর্মীয় বক্তব্য বা ধর্মকে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা,
* জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা,
* নির্বাচনের আগে ও পরে অন্তত এক মাস সেনা ও বিশেষায়িত বাহিনী মোতায়েন রাখা,
* সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, লুটপাট, বাড়িঘর ভাঙচুর ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
বক্তারা বলেন, নির্বাচন শুধু ভোট দেওয়ার দিনকে ঘিরে নয়; এর আগে-পরেও নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি। অনেক সময় ফলাফল ঘোষণার পরেও হামলা বা ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনা ঘটে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, লেখক মহিউদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, কবি হাসান হাফিজ, এম এ আজিজ, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধরসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পাল।
সংগঠনটির নেতারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যাতে দেশের যেকোনো এলাকায় বসবাসকারী মানুষ ভয় ছাড়াই ভোট দিতে পারে।