সর্বশেষ

জমির বিরোধে খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু—তবু তারা ‘জুলাই শহীদ’

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২৫
জমির বিরোধে খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু—তবু তারা ‘জুলাই শহীদ’

জুলাই আন্দোলনে শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ৮৩৪ জনের মধ্যে অন্তত ৫২ জনের মৃত্যু আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট নয় বলে উঠে এসেছে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে। কেউ জমির বিরোধে খুন হয়েছেন, কেউ দুর্ঘটনায়, কেউ আগুনে পুড়ে বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। অথচ তাঁদের নাম সরকারি প্রজ্ঞাপনে ‘শহীদ’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

যেমন, গত বছরের ১৪ আগস্ট রাজধানীর ওয়ারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপি নেতা মো. আল-আমিন ভূঁইয়া ও তাঁর ভাই নুরুল আমিনকে। মামলার নথি ও স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁদের মৃত্যু আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তবু আল-আমিনের নাম শহীদ তালিকায় রয়েছে।

 

ছবিঃ প্রথম আলো

 

সরকারি সংজ্ঞা অনুযায়ী, শহীদ হিসেবে গণ্য হবেন তাঁরা, যাঁরা ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ক্ষমতাসীন দলের হামলায় নিহত হয়েছেন। অথচ তালিকায় রয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা, অসুস্থতা, আগুনে পুড়ে বা পূর্বশত্রুতায় নিহতদের নামও।

 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক পরিবার সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। শহীদ পরিবারকে সরকার এককালীন ৩০ লাখ টাকা, মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা এবং ঢাকায় ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

 

তালিকায় রয়েছে এমন ব্যক্তিরাও, যাঁরা ৫ আগস্টের (২০২৪) পর মারা গেছেন—যেমন যাত্রাবাড়ীতে মারামারিতে নিহত সাইফ আরাফাত শরীফ ও মো. সাইদুল ইসলাম ইয়াছিন। আবার কেউ ছাত্রলীগ নেতা, কেউ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী ছিলেন।

 

ভুয়া শহীদদের নামের তালিকা। ছবিঃ প্রথম আলো

 

আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের স্থাপনায় আগুন দিতে গিয়ে বা নেভাতে গিয়ে মারা গেছেন। যেমন, বরগুনায় মেয়রের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মারা যান মো. আল-আমিন হোসেন। যশোরে হোটেল জাবিরে আগুনে নিহত ২৩ জনের নামও তালিকায় রয়েছে, যদিও তাঁদের মৃত্যুর সময় আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে।

 

আইনজীবীরা বলছেন, শহীদের সংজ্ঞা আইনে স্পষ্টভাবে নির্ধারিত, এর বাইরে গিয়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই। শহীদদের প্রকৃত তালিকা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক স্বজন। তাঁদের দাবি, প্রকৃত শহীদদের যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে, নয়তো পুরো প্রজ্ঞাপনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

সব খবর

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে নীরবে চলছে সংখ্যালঘু নিধন

শ্রীলংকা গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ বাংলাদেশে নীরবে চলছে সংখ্যালঘু নিধন

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে জরুরী তলব

নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে জরুরী তলব

‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনো পরাজিত শক্তি বদলাতে পারবে না’

বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে মানুষের দৃঢ় প্রত্যয় ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনো পরাজিত শক্তি বদলাতে পারবে না’

বাংলাদেশ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে

শ্রীলংকা গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ বাংলাদেশ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে

ফটিকছড়িতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতা

ঈদের দিনে অর্ধশত শহীদ ফটিকছড়িতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতা

জন্মস্থানে অবহেলিত কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী ডা. ফজলে রাব্বী

নেই কোনও স্মৃতিচিহ্ন জন্মস্থানে অবহেলিত কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী ডা. ফজলে রাব্বী

বিজয়ের আগেই কূটনৈতিক কৌশল বদলেছিল ওয়াশিংটন

মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলো বিজয়ের আগেই কূটনৈতিক কৌশল বদলেছিল ওয়াশিংটন

কারাগারে দ্বিতীয় বিজয় দিবস কাটাবেন একাত্তরের বিজয়ের কারিগরেরা

‘দেশ স্বাধীন করার শাস্তি’ কারাগারে দ্বিতীয় বিজয় দিবস কাটাবেন একাত্তরের বিজয়ের কারিগরেরা