গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এমিরেটাস সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন দেশের বর্তমান সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, খুনোখুনি ও মব সংস্কৃতির প্রেক্ষাপট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি সরকার এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর প্রেসক্লাবে গণফোরামের ৩২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, “আজকে দেশে সন্ত্রাস ও মব সংস্কৃতি এক নতুন মাত্রায় প্রবাহিত হচ্ছে। যদি সরকার এগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তবে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে রক্ষা করতে আমাদের সকলকে একত্রিত হতে হবে।”
ড. কামাল হোসেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেন, গত কয়েক বছরে গণতন্ত্রহীনতা, স্বৈরশাসন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণের ফলে দেশে এক বিশাল সংকট তৈরি হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, “স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা আজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।”
গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আরও বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে, যেখানে বৈষম্যহীন সমাজ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করেন, এই বিজয় ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে হবে, যাতে কোনো অশুভ শক্তি তা ধ্বংস করতে না পারে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য এক ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার রক্ষা হবে। আমরা একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যে, জনগণের সমর্থন নিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার, অপরাধীদের বিচার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করা উচিত। এছাড়া, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, এবং অন্যান্য সম্মানিত অতিথিরা।