যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউজের নথিপত্র সামনে আসার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাগরিকত্ব, রাজনৈতিক যোগ্যতা ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন করে আইনি ও রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশিত নথিতে তাকে ‘ব্রিটিশ’ নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হওয়ায় বিষয়টি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
নথিতে যা আছে
কোম্পানি হাউজের রেকর্ড অনুসারে, ২০১৫ সালের ১ জুলাই যুক্তরাজ্যে “হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালটেন্টস লিমিটেড” (White and Blue Consultants Limited) নামে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন করেন তারেক রহমান। কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৯৬৬৫৭৫০। পরিচালক হিসেবে “মিস্টার তারেক রহমান”-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তার জন্মতারিখ ২০ নভেম্বর ১৯৬৭ ধরা হয়েছে।
সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, নথির ‘Nationality’ অংশে তার জাতীয়তা স্পষ্টভাবে “BRITISH” হিসেবে লিপিবদ্ধ আছে। পাশাপাশি তার আবাসের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে লন্ডনের কিংস্টন আপন টেমস অঞ্চল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারি নথিতে নিজের পরিচয়ে ‘ব্রিটিশ’ জাতীয়তা উল্লেখ থাকলে তা মূলত যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণের সরকারি স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়।
নির্বাচনে অযোগ্যতার প্রশ্ন
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যেসব ব্যক্তি বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেন, তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য। দ্বৈত নাগরিকত্বধারীরাও একই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। ফলে কোম্পানি হাউজের নথিতে তারেক রহমানকে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে উল্লেখ থাকা তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বড় বাধা তৈরি করেছে বলে আইন বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
দেশে ফেরা ও আইনি প্রক্রিয়া
রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে বা নির্বাচন করার যোগ্যতা পেতে হলে প্রথমে তাকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ব্রিটিশ নাগরিকত্ব সারেন্ডার একটি দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া; তা একদিনে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
এ কারণে তারেক রহমান কবে নাগরিকত্ব ত্যাগ করবেন, দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ আদৌ পাবেন কি না—তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা চলছে।