ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জামায়াতপন্থি’ হিসেবে পরিচিত ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)-এর ঘোষিত কমিটিতে ‘বিএনপিপন্থি’ সাদা দলের একাধিক সদস্যের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা বলছেন, তাদের অনুমতি বা অবগতির বাইরে নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা তারা মেনে নিতে পারছেন না।
১৬ অক্টোবর ইউটিএল তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টারের ২৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপরই সমাজবিজ্ঞান, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন বিভাগের অন্তত চারজন শিক্ষক প্রকাশ্যে আপত্তি জানান। তারা হলেন অধ্যাপক সালমা বেগম, সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব কায়সার, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং সহযোগী অধ্যাপক সাইদুর রহমান।
অধ্যাপক সালমা বেগম সাদা দলের আহ্বায়ক বরাবর চিঠিতে লেখেন, “আমি হঠাৎ একটা তালিকায় লক্ষ্য করলাম, আমার নাম আছে অথচ আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।” একইভাবে অধ্যাপক নুরুল ইসলামও লিখেছেন, “আমি ইউটিএলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে তালিকায় নাম দেখে বিস্মিত হয়েছি।”
অধ্যাপক সাইদুর রহমান ইউটিএলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক বরাবর চিঠি দিয়ে কমিটি থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর মাহবুব কায়সার বলেন, “আমি ইউটিএলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। তারা কেন আমার নাম দিয়েছে, জানি না।”
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম জানান, “আমাদের একাধিক সদস্য লিখিতভাবে এবং ফোনে জানিয়েছেন, তাদের না জানিয়ে ইউটিএলের কমিটিতে নাম রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি এবং সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।”
ইউটিএলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে আরবি বিভাগের অধ্যাপক যুবায়ের মুহাম্মদ এহসানুল হককে এবং সদস্য সচিব গণিত বিভাগের অধ্যাপক মোতালেব হোসেনকে। নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক যুবায়ের বলেন, “আমি জানি না, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কারা যুক্ত করেছেন।”
ইউটিএলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, “যারা অভিযোগ করেছে, তারা কমিটির বিষয়ে অবগত ছিল। তবে আমরা লিখিত কিছু নিইনি। সাদা দল ও ইউটিএল আলাদা সংগঠন।”
২০২৫ সালের ২৭ জুলাই আত্মপ্রকাশ করা ইউটিএল নিজেদের ‘অরাজনৈতিক পেশাদার’ সংগঠন দাবি করলেও, অতীতে তাদের সদস্যদের ইসলামী ছাত্রশিবিরপন্থি হিসেবে পরিচিত হতে দেখা গেছে। ফলে ঢাবির কমিটিতে সাদা দলের সদস্যদের নাম থাকা নিয়ে বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে।