গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবারও লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তার লন্ডনযাত্রা হওয়ার কথা রোববার, তবে বিমানে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে যাত্রা কিছুটা পিছিয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর থেকেই তার বিদেশে চিকিৎসার প্রস্তুতি দ্রুত এগোচ্ছে।
এমন এক সময় খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে, যখন দেশে নির্বাচন তফসিল ঘোষণার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনটি আসনে প্রার্থী হবেন। অন্যদিকে তারেক রহমানও প্রথমবারের মতো ভোটে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু নতুন পরিস্থিতিতে তার দেশে ফেরা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

তারেক রহমান এখনো বাংলাদেশের ভোটার নন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মনোনয়ন জমার আগেই তাকে ভোটার হতে হবে। কমিশন চাইলে তিনি লন্ডন থেকেই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারবেন এবং অনুমোদিত প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমাও করা যাবে। একই নিয়ম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
শাশুড়িকে লন্ডনে নিতে শুক্রবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন তারেকের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আড়াই ঘণ্টা সময় কাটান। বিএনপি নেত্রী শামিলা রহমান সিঁথিও তাদের সঙ্গে লন্ডনে যাবেন। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সময়সূচি পিছিয়ে যাওয়ায় যাত্রা রবিবার সকালেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের জটিলতা নিয়ে তিনি কয়েক দিন ধরে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন। বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতামত নিয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া জরুরি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে ‘রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন বাহিনীর প্রধান, জামায়াতের আমির এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস হাসপাতাল গিয়ে তার খোঁজখবর নিয়েছেন। খালেদার সুস্থতা কামনায় শুক্রবার মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে অপারেশন থিয়েটারসহ সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় এসে পৌঁছালে দ্রুতই খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা শুরু হবে।