সর্বশেষ

তিস্তায় চীনা অর্থায়ন অনিশ্চিত, দুই মাসেও জবাব দেয়নি বেইজিং

কূটনীতি ডেস্ক বিডি ভয়েস
প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৩৭
তিস্তায় চীনা অর্থায়ন অনিশ্চিত, দুই মাসেও জবাব দেয়নি বেইজিং

বাংলাদেশের বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও পুনর্গঠন প্রকল্প অর্থায়ন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। প্রথম ধাপে চীনের কাছে ৫৫ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার দুই মাসেরও বেশি সময় অতিক্রম করলেও বেইজিং এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, জুলাই মাসেই প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এরপর একাধিকবার চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো জবাব মেলেনি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে বাঁধ নির্মাণ, খনন, ভূমি উন্নয়ন ও নদী পুনর্গঠনে প্রথম ধাপে প্রয়োজন ৭৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৫৫ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে চীনের কাছ থেকে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলার।

 

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) চীনের কারিগরি সহায়তায় ব্যয় কাঠামো তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের উজান অংশে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের কারণে ভাটিতে বাংলাদেশে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রংপুর অঞ্চলের চার জেলার লাখো মানুষ কৃষি, মৎস্য ও জীবিকার সংকটে পড়েছে।

 

সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং জানিয়েছেন, একটি চীনা বিশেষজ্ঞ দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করে সরেজমিন পরিদর্শন করবে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না পাওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।

 

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তিস্তা নদীর অবস্থান ভূরাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। ৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীর মধ্যে ৩০৫ কিলোমিটার ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গে এবং ১০৯ কিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত। ফলে ভারত ও চীনের স্বার্থও প্রকল্পটির সঙ্গে জড়িত।

 

চীনা অর্থায়ন এলে প্রথম ধাপে জমি পুনরুদ্ধার, বাঁধ ও গার্ড স্পার নির্মাণ, নদী খনন ও পরিবেশ-সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন হবে। দ্বিতীয় ধাপে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, বন্যা ব্যবস্থাপনা, নৌপথ উন্নয়ন, টাউনশিপ গড়ে তোলা এবং জীবিকা পুনর্গঠন পরিকল্পনা রয়েছে।

 

সরকার মনে করছে, চীনের সহায়তা ছাড়া এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে দেরি হওয়ায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “তিস্তা আমাদের জীবনের অংশ। আমরা আশা করি, চীন সহযোগিতার হাত বাড়াবে।”

সব খবর