জুলাই সহিংসতায় আহত হিসেবে গেজেটভুক্ত ১২৭ জনের তালিকা বাতিলের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। যাচাই-বাছাইয়ে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ১০৪ জনই আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন না। এছাড়া ২৩ জনের নাম তালিকায় একাধিকবার এসেছে।
নেত্রকোনার একটি উপজেলার তিনজন তরুণ ভাতা না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে গেলে জানা যায়, তাঁদের গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ধরনের অসংগতি ও অভিযোগের ভিত্তিতে সরকার প্রথমবারের মতো ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ গেজেট বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে।
তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৩৯ জনের গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। সিলেট থেকে ২৭ জন, ময়মনসিংহ ২১, ঢাকা ১৪, রাজশাহী ১৩, খুলনা ৯, বরিশাল ও রংপুর বিভাগ থেকে সবচেয়ে কম সংখ্যক সুপারিশ এসেছে। বাতিলের তালিকায় অধিকাংশই ‘গ’ শ্রেণির (আহত) যোদ্ধা। ‘ক’ ও ‘খ’ শ্রেণি থেকে বাদ পড়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
সরকারি সূত্র জানায়, আন্দোলনে অংশগ্রহণের প্রমাণ না থাকা, চিকিৎসার কাগজপত্রের ঘাটতি, কিংবা আন্দোলনের সময় আঘাতপ্রাপ্ত না হওয়া—এসব কারণেই গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন জানান, মাঠপর্যায়ে যাচাইয়ে এসব অসংগতি উঠে এসেছে।
গত জুনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। এরপর আগস্টে বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি নতুন আবেদন ও পুরনো গেজেট যাচাই করে সুপারিশ পাঠায়। পাশাপাশি জুলাই ফাউন্ডেশনের অভিযোগও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, “অনেকের নাম গেজেটে থাকলেও তাঁরা আন্দোলনে ছিলেন না বা আহত হননি—এমন অভিযোগ এসেছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।”
এই উদ্যোগের মাধ্যমে গেজেটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। শিগগিরই বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জানা গেছে।