নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নতুন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ছোট ভাই ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তিনি বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা অধিশাখা–১ এর যুগ্ম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশাসকের পদে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই নিয়োগকে ঘিরে সামাজিক ও প্রশাসনিক পরিমণ্ডলে নানা আলোচনা চলছে। তবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, এই নিয়োগের পেছনে তার কোনো প্রভাব বা তদবির নেই।
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে আমার ভাইকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করিনি। এলজিআরডি উপদেষ্টা, সচিব কিংবা সরকারের অন্য কোনো কর্মকর্তা বা উপদেষ্টাকেও আমি ফোন করিনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ভাই সরকারের একজন যুগ্ম সচিব। তাকে মূল দায়িত্বের পাশাপাশি নাসিক প্রশাসকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে আমার কোনো প্রভাব নেই, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
ড. আব্দুল্লাহর যোগ্যতার প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “তিনি জার্মানি থেকে মাস্টার্স, অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা; তার জন্য আমার তদবিরের প্রয়োজন পড়ে না। আমি স্বজনপ্রীতিতে বিশ্বাস করি না এবং গত ১৫ মাসে কোনো নিয়োগ বা পদোন্নতিতে প্রভাব খাটাইনি।”
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি) থেকে ১ সেপ্টেম্বর জারি করা এক অফিস আদেশে ড. আব্দুল্লাহর নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি সেপ্টেম্বরের শুরুতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এর আগে নাসিক প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন এ এইচ এম কামরুজ্জামান, যিনি সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে যোগ দেন।
এ বিষয়ে নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, “ড. আব্দুল্লাহ ৩১ আগস্ট প্রশাসক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। তবে তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ভাই কি না, তা আমরা পরে জেনেছি।”
ড. আব্দুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আত্মীয়দের প্রশাসনিক নিয়োগ সবসময় জনমনে প্রশ্ন তোলে। স্বচ্ছ ও নীতিনির্ভর প্রক্রিয়া নিশ্চিত না হলে প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর জনগণের আস্থা দুর্বল হতে পারে।