সাবেক সচিব ভুঁইয়া মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আনন্দলোক ইকো রিসোর্ট থেকে তাকে আটক করে ঢাকায় আনা হয়।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। “আজই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।”
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, মামলার পর থেকেই শফিকুল ইসলাম কলাপাড়ার ওই রিসোর্টে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আনন্দলোক ইকো রিসোর্টটির মালিকানার সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ জানিয়েছে, শফিকুল ইসলামের পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের আরও সাত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, লতিফ সিদ্দিকী, আবু আলম শহীদ খানসহ অন্যদের সঙ্গে তার ‘গোপন আঁতাতের’ বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পরই এ গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুঁইয়া মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ছিলেন। পরে ২০১৫ সালে তিনি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। অবসরের পর তিনি লেখালেখি ও সংগীতচর্চায় মনোনিবেশ করেন। তার লেখা ডজনখানেক বই প্রকাশিত হয়েছে, পাশাপাশি নিজের লেখা গান নিয়েও সিডি বের করেন তিনি।
এর আগে একই মামলায় আরেক সাবেক সচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি নিয়মিত টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিতেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মঞ্চ ৭১’-এর আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। ওই সভায় কয়েকজন আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিয়ে মব সন্ত্রাস করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে সেখানে হামলার ঘটনাওঁ ঘটে।
পরে পুলিশ হামলাকারীদের পরিবর্তে লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয়। ২৯ আগস্ট শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তিনি ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এবার একই মামলায় শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধেও গোপন আঁতাতের অভিযোগ আনা হলো।
এই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশ বলছে, ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র’ এবং ‘গোপন আঁতাতের’ বিষয়ে আরও তথ্য অনুসন্ধান করা হচ্ছে।