সর্বশেষ

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

অবৈধ অস্ত্রের বিস্তারে বাড়ছে সহিংসতা ও মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:২৪
অবৈধ অস্ত্রের বিস্তারে বাড়ছে সহিংসতা ও মৃত্যু

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও সশস্ত্র সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। আধুনিক বিদেশি অস্ত্রের সহজলভ্যতা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আরও বেপরোয়া করে তুলছে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও গুলির ঘটনায় জনমনে গভীর নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিতে বিএনপির এক নেতা নিহত হন। এর আগে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান তিনি। চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সন্ত্রাসীরা একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। পুরোনো ঢাকার শ্যামবাজারে মসলা ব্যবসায়ী আবদুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। খুলনা ও মিরপুরেও প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

 

এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। বিষয়টি নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

 

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র এখনো পুরোপুরি উদ্ধার না হওয়া এবং সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের প্রবাহ সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করেছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব অস্ত্র সহিংসতা বাড়াতে ব্যবহার হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

র‌্যাবের মুখপাত্র উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দেশজুড়ে নজরদারি ও অভিযান জোরদার করা হয়েছে। সব ইউনিট সমন্বিতভাবে কাজ করছে বলে তিনি দাবি করেন।

 

পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুস শহিদ বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে টার্গেটেড গোয়েন্দা অভিযান বাড়ানো জরুরি। মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ন হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

 

পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে সারা দেশে ২৭৯টি হত্যা মামলা হয়েছে। একই সময়ে ডাকাতি ও দস্যুতার ১৮৪টি এবং চুরি-ছিনতাইয়ের ১,১১০টি মামলা নথিভুক্ত হয়। গত ১৫ মাসে দেশব্যাপী কমপক্ষে ৪,৮০৯টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট: ফেজ-২’-এর আওতায় অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধী গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের সময় ঘনিয়ে আসার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সব খবর