জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে তিনি দুবাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন। সেখান থেকে আরেক ফ্লাইটে নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন তিনি।
এই সফরে ইউনূসের সঙ্গে রয়েছেন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ছয় নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকেই প্রতিনিধি দলে যুক্ত হবেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রধান দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের জাতিসংঘ সফর একটি নজিরবিহীন ঘটনা। সফরসূচি অনুযায়ী, ইউনূস ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ আলোচনায় ভাষণ দেবেন।
এ বছর জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অধিবেশনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে: “Better Together: Eighty Years and More for Peace, Development and Human Rights”। অধিবেশনে ইউনূস অংশ নেবেন একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব যুব কর্মসূচির ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশ নেবেন ইউনূস।
তিনি আরও জানান প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে তুলে ধরবেন জুলাই আন্দোলনের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বিগত এক বছরে বাংলাদেশে সংঘটিত সংস্কার এবং আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের প্রত্যয়। পাশাপাশি, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভূমিকা, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, এসডিজি অর্জনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর চ্যালেঞ্জ, প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন এবং ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়গুলোও তার বক্তব্যে উঠে আসবে।
অধিবেশনের ফাঁকে ইউনূস বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। সফর শেষে ২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।