বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো গত বছরের ৩১ মে থেকে বন্ধ রয়েছে। পুনরায় শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা হলেও নতুন নিয়োগে অগ্রগতি হয়নি। তবে বিদ্যমান সমঝোতার আওতায় রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা নির্ধারণে নতুন শর্ত দিয়েছে মালয়েশিয়া। এ বিষয়ে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশসহ নেপাল, ভারত ও মিয়ানমারের দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে অংশ নিতে হলে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে—পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা, অন্তত তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর রেকর্ড, ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর প্রমাণ, নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা, ১০ হাজার স্কয়ারফুট অফিস, পাঁচটি আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার প্রশংসাপত্র, এবং মানবপাচার বা আর্থিক অপরাধে জড়িত না থাকার নিশ্চয়তা।
এই শর্তে হতবাক অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি। তাদের মতে, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এসব মানদণ্ড পূরণে অক্ষম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এজেন্সি মালিক বলেন, “শর্তগুলো কঠিন। অনেকেরই এত বড় অফিস নেই, আবার কারও বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উচিত আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।”
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অতীতে একাধিকবার বন্ধ হয়েছে। ২০০৮ সালে প্রথমবার বন্ধ হয়ে ২০১৬ সালে চালু হয়, আবার ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে বন্ধ হয়। ২০২১ সালে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালের আগস্টে পুনরায় চালু হয়। তবে সর্বশেষ কর্মী গেছে ২০২3 সালের ৩১ মে। প্রায় ১৭ হাজার কর্মী যেতে না পারলেও তাদের মধ্যে ৭,৮২৩ জনকে মালয়েশিয়া বাছাই করেছে এবং পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী শুরুতে ২৫টি এজেন্সিকে অনুমোদন দেওয়া হলেও পরে তা বাড়িয়ে ১০১টি করা হয়। তবে নতুন শর্তে এ সংখ্যা আবার কমে যেতে পারে।
ব্রিটিশ অধিকারকর্মী এন্ডি হল বলেন, “যদি শর্তগুলো নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ হয়, তবে খুব কম এজেন্সিই তা পূরণ করতে পারবে। এটি হয়তো মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের আরেকটি প্রচেষ্টা।”
বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।