তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “সাময়িক সমাধান নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চায় আপিল বিভাগ।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তবে তা কবে থেকে কার্যকর হবে?
বুধবার আপিল বিভাগের সাত বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার চারটি আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও ড. শরীফ ভুঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
শুনানি শেষে আদালত নতুন করে আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেয় এবং ২১ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবর্তিত হয়। ১৯৯৮ সালে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়, যা ২০০৪ সালে খারিজ হয়। এরপর ২০০৫ সালে আপিল করা হলে, ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংশোধনীটি বাতিল করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়, যা ৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন নাগরিক এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথকভাবে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই বিষয়ে আবেদন করেন।
প্রধান বিচারপতি এসময় মন্তব্য করেন, আদালত ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থায়ী ও কার্যকর নির্বাচনকালীন কাঠামো চায়, যা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সহায়ক হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই শুনানি ও মন্তব্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।