সুদানে চলমান সংঘাতের মধ্যে ভয়াবহ এক ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী খার্তুমের ওমদুরমান শহরের একটি মসজিদে এই হামলা চালানো হয়, যেখানে নামাজরত অবস্থায় সাধারণ মানুষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলা দেশটির সাম্প্রতিক সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নামাজ চলাকালীন হঠাৎ করে একটি ড্রোন মসজিদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। মুহূর্তেই বিস্ফোরণ ঘটে এবং মসজিদ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো স্থানীয় হাসপাতাল ও মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব এবং বিদ্যুৎ সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এই হামলার জন্য কে দায়ী, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)-এর মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই হামলার দায় একে অপরের ওপর চাপাচ্ছে। RSF দাবি করেছে, সরকারি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনী বলছে, RSF-ই সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব এক বিবৃতিতে বলেন, “ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল। এই ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।”
সুদানে গত এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও RSF-এর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে সংঘাত চলছে। এতে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরে প্রতিনিয়ত বোমা হামলা, গোলাগুলি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ড্রোন হামলা শুধু সামরিক সংঘাত নয়, বরং ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ না আসে, তাহলে সুদানের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।