নেপালে টানা বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগামী ৫ মার্চ নির্বাচন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল এ ঘোষণা দেন। তার আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
রাষ্ট্রপতির দপ্তর জানিয়েছে, শপথ নেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল প্রতিনিধি পরিষদ বিলুপ্ত করার সুপারিশ। এর ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি পৌডেল নির্বাচন ঘোষণার ঘোষণা দেন।
৭২ বছর বয়সী সুশীলা কার্কি নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়লেন। এর আগে তিনি ২০১৬–২০১৭ সালে দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন।
দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও ন্যায়বিচারের পক্ষে তার দৃঢ় ভূমিকার কারণে তিনি তরুণ প্রজন্ম, বিশেষত সাম্প্রতিক জেন-জি আন্দোলনকারীদের কাছে জনপ্রিয়।
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে তিন দিনব্যাপী টানা আন্দোলনে সরকার পতনের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভ দমন করতে গুলি চালানো হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন, যা আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তোলে। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান। আন্দোলনকারীরা তার পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কয়েকজন মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালান।
এ অবস্থায় সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল, রাষ্ট্রপতি পৌডেল ও আন্দোলনের প্রতিনিধি নেতাদের আলোচনার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির নাম ঘোষণা করা হয়। ছোট আকারের মন্ত্রিসভা নিয়ে তিনি ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছেন।
সুশীলা কার্কি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের পাশাপাশি ভারতপন্থী হিসেবে তার পরিচিতি আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন এখন তার বড় চ্যালেঞ্জ।