সর্বশেষ

বিচারব্যবস্থার ফাঁকফোকরে বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় দায়

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:১৬
বিচারব্যবস্থার ফাঁকফোকরে বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় দায়
প্রায় পাঁচ দিন বাংলাদেশ ঘুরে ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেশের মানবাধিকার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থার কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপরাধ দমনে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা দিন দিন নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতার বোধকে বাড়িয়ে তুলছে। সম্প্রতি বেশ কিছু হত্যাকান্ড, মব হামলার পর এই প্রশ্ন আরও জোরালোভাবে সামনে এসেছে—আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা কি সাধারণ মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে?

 

বুধবার বিকেলে রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে ‘আ ইয়ার অব ট্রানজিশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে নিজস্ব এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন মানবাধিকার সংগঠন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এসএএইচআর) এর নির্বাহী পরিচালক দীক্সা ইল্লাঙ্গাসিংহে।

 

সংগঠনটি বলছে, গণহারে হত্যা মামলা, অভিযুক্তদের জামিন থেকে বঞ্চিত হওয়া, বিচারপ্রক্রিয়ায় ফাঁকফোকর ও বিলম্বের মতো বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। দীক্সা ইল্লাঙ্গাসিংহে বলেন, জুলাই পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান অবনতি হয়েছে। জননিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে নিরাপত্তা বাহিনী মব, প্রতিহিংসামূলক হামলা এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।

 

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তাদের সম্পদ ও উপাসনালয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে দীক্সা ইল্লাঙ্গাসিংহে আরো বলেন, হিন্দু, আহমাদিয়া, সুফি মতাবলম্বীসহ অন্যান্য সম্প্রদায়, সমতল ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী, লিঙ্গভিত্তিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এবং নারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী, ধর্মীয় গোষ্ঠী ও সংগঠিত মবের উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

 

সংবাদ সম্মেলনে মোট ৯টি পর্যবেক্ষণ ও উদ্বেগ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ববর্তী শাসনের সময় প্রণীত দমনমূলক আইনের অব্যাহত প্রয়োগ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর অব্যাহত আক্রমণ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশনের অচলাবস্থা, নাগরিক সমাজের মধ্যে মেরুকরণ ও বিভক্তি গভীর হওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এসএএইচআরের কো চেয়ারম্যান রশমি গোস্বামী, সংগঠনটির অন্যতম সদস্য সারূপ ইজাজ এবং বাংলাদেশ ব্যুরো মেম্বার সাঈদ আহমেদ।

 

আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন, অপরাধ দমন ও বিচারপ্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে হলে প্রয়োজন স্বাধীন ও দক্ষ তদন্ত, দ্রুত বিচার, এবং সাক্ষী ও ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। শুধু আইন প্রণয়ন নয়, তার বাস্তব প্রয়োগে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা জরুরি।

সব খবর

আরও পড়ুন

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো ‘সংকটে’

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে আর্টিকেল ১৯ এর সতর্কবার্তা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো ‘সংকটে’

অর্ন্তবর্তী সরকারের সময়ে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা: এক বছরেও বিচার হয়নি

অর্ন্তবর্তী সরকারের সময়ে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা: এক বছরেও বিচার হয়নি

কোনোভাবেই থামছে না ‘মব’ সহিংসতা

৬ মাসে ২৩০ ঘটনা, ১৩ মাসে ২২০ নিহত কোনোভাবেই থামছে না ‘মব’ সহিংসতা

বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকটে ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের দৃষ্টি আকর্ষণে জেএমবিএফ-এর জরুরি আহ্বান

বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকটে ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের দৃষ্টি আকর্ষণে জেএমবিএফ-এর জরুরি আহ্বান

ইইউ–বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের মূলভিত্তিই হবে মানবাধিকার

মতামত ইইউ–বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের মূলভিত্তিই হবে মানবাধিকার

আগস্ট মাসে সাংবাদিক নির্যাতন ও মব সহিংসতা বেড়েছে

এইচআরএসএস প্রতিবেদন আগস্ট মাসে সাংবাদিক নির্যাতন ও মব সহিংসতা বেড়েছে

‘স্লোগান দিয়ে’ কারাগারে বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ, পরিবার বলছে আইনের ভয়াবহ অপব্যবহার

‘স্লোগান দিয়ে’ কারাগারে বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ, পরিবার বলছে আইনের ভয়াবহ অপব্যবহার

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হুমকির মুখে, ২৯২ বিশিষ্ট প্রবাসী নাগরিকের প্রতিবাদ

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হুমকির মুখে, ২৯২ বিশিষ্ট প্রবাসী নাগরিকের প্রতিবাদ