ঢাকার পল্লবীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে অভিযুক্তদের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিক। মামলার বাদী জানান, ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও মাত্র তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে, যা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি আদালতে নারাজি দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৭ মার্চ রাতে মাটিকাটা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অপকর্ম অনুসন্ধানে গিয়ে ওই সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন। অভিযোগ অনুযায়ী, ১৬ জন পুরুষ তাকে মারধর ও ধর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে পালানোর সময় পুনরায় হামলার শিকার হন। স্থানীয়রা তার চিৎকারে এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
পরে তিনি পল্লবী থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যার মধ্যে আটজনের নাম উল্লেখ ছিল। গ্রেপ্তার হওয়া এনামুল হক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। হামিদুর রহমান নামের আরেক অভিযুক্তও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
তবে তদন্ত শেষে ঢাকার তেজগাঁও উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পরিদর্শক আমেনা খাতুন গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং বাকি ১৩ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, বাদী তদন্তে সহযোগিতা করেননি, ফোন ধরেননি এবং সাক্ষাৎকারে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ফলে সোহেল নামের এক প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দিও রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাদী ও তার বন্ধু সোহেল নির্মাণাধীন ভবনের ছবি তুলছিলেন, যা দেখে বখাটেরা তাদের ধরে ফেলে। সোহেলকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে বাদীকে ভবনের তৃতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এনামুল হক ও হামিদুর রহমান তাকে ধর্ষণ করে। অন্যান্য অভিযুক্তরা নির্যাতনে অংশ নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তবে বাদী দাবি করেন, তদন্ত কর্মকর্তা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি এবং নিজের মতো করে অভিযোগপত্র তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, “১৬ জনের মধ্যে মাত্র তিনজনের নাম এসেছে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
এদিকে, আসামি এনামুল হকের আইনজীবী দাবি করেছেন, তার মক্কেল নির্দোষ এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের ষড়যন্ত্রে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, “স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এনামুল হক ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।”
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারাধীন। তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, নতুন তথ্য পাওয়া গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।