আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের মৃত্যু এবং হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। তবে বিপর্যয়ের মধ্যেও নারীদের উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে—তালেবান সরকারের কঠোর নীতির কারণে।
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে মৃত্যুর কালো ছায়া নারীদের উপর। শরিয়ত আইন অনুযায়ী পরপুরুষের ছোঁয়া হারাম, যার জেরে ভূমিকম্পে চাপা পড়া নারীদের বাঁচাচ্ছে না উদ্ধারকারীদল। পরিণতিতে বাঁচার সুযোগ থাকলেও, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হচ্ছে সেখানকার নারীদের।
গত সপ্তাহে হেরাত প্রদেশে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। কিন্তু তালেবান প্রশাসনের বিধিনিষেধের কারণে নারী স্বাস্থ্যকর্মী, ত্রাণকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অনেক নারী চিকিৎসক ও নার্স ভূমিকম্পের পরপরই সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তালেবান সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, নারীরা পুরুষ অভিভাবক ছাড়া বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি জরুরি পরিস্থিতিতেও।
একজন নারী স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “আমরা জানি, নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না। এটা শুধু অমানবিক নয়, বিপজ্জনকও।”
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, নারী কর্মীদের অংশগ্রহণ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ উদ্ধার ও পুনর্বাসন সম্ভব নয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুর মানসিক ও শারীরিক সহায়তায় নারী কর্মীদের ভূমিকা অপরিহার্য।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র দাবি করেছেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।” তবে বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক দুর্গত এলাকায় এখনো কোনো চিকিৎসা বা খাদ্য সহায়তা পৌঁছায়নি।
আন্তর্জাতিক মহল আফগানিস্তানে নারী অধিকার ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে তালেবান প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।