বাংলাদেশে দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংগঠনটি বলেছে, এ ধরনের হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিসরের জন্য গুরুতর হুমকি।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। হামলাকারীরা ভবনে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এই সহিংসতা ঘটে।
এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। তিনি ২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সংঘটিত আন্দোলনের সময় আলোচনায় আসেন যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ওই বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ফিরিয়ে আনার এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেও রাজনৈতিক সহিংসতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা নাগরিক পরিসরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী এক বিবৃতিতে বলেন, “যুব নেতা ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড একটি ভয়াবহ ঘটনা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত আগস্ট থেকে যে মব সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, তা ঠেকাতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ভয়ংকর আঘাত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে রাজনৈতিক সহিংসতায় উসকানি এমন এক পরিবেশ তৈরি করছে, যেখানে সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মীরা ক্রমাগত ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।”
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহিংসতা বন্ধ ও দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।