সর্বশেষ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা স্থগিত, শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন ঘোষণা

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:২৪
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা স্থগিত, শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন ঘোষণা
সিন্ডিকেট সভা শেষে সাংবাদিকদের তথ্য জানাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য চালু থাকা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।

 

তবে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার থেকে পূর্ণ শাটডাউনে যাচ্ছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা অভিযোগ করেছেন, শনিবার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের হাতে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

 

রোববার উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ জানান, পোষ্য কোটা স্থগিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ধ্বস্তাধস্তির ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে—একটি পাঁচ সদস্যের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি, অপরটি বিচার বিভাগীয় কমিটি। আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে কোটা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

 

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা তীব্র আন্দোলনে নামেন। তারা বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি ও অনশনে বসেন। শুক্রবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে এবং উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দিন খানের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এসময় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হলে কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন।

 

পরে উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, রেজিস্ট্রার ও নির্বাচন কমিশনারসহ কয়েকজন ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত পৌনে ২টার দিকে উপাচার্য পোষ্য কোটা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন।

 

শিক্ষার্থীদের দাবি, কোনো অযৌক্তিক কোটা রাখা যাবে না। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কোটা পুনর্বহাল প্রজ্ঞাপন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অন্যদিকে শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, সহকর্মীদের লাঞ্ছনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।

 

ক্যাম্পাসের এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই রাবির কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। সিন্ডিকেট সভায় রাকসু নির্বাচন যথাসময়ে আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্ট করছে—পোষ্য কোটা ইস্যু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারীদের দুই মেরুতে দাঁড় করিয়েছে। এখন নজর সিন্ডিকেটের পরবর্তী সিদ্ধান্ত ও আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রূপরেখার দিকে।

সব খবর