ঢাকায় গত চৌদ্দ মাসে মোট ৪৫৬টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যা রাজধানীকে ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্থির করে তুলেছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, জুলাই ২০২৪ থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত রাজধানীতে ৫৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে এবং বর্তমানে প্রায় ১৫০০ অস্ত্র অপরাধীদের হাতে রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক নীতি ও রাষ্ট্রযন্ত্রের শৃঙ্খলা ভাঙা পরিস্থিতি এই অপরাধ প্রবণতার মূল কারণ। থানা ও কারাগার ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ফলে অপরাধীরা প্রকাশ্য দিবালোকে খুনও করতে পারছে। গত ১৪ মাসে গণপিটুনিতে অন্তত ২১৬ জন মারা গেছে, আর লাশ বিকৃত করার ঘটনা বাড়ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীল করে রাখছে। নিরাপত্তাহীনতার এই পরিস্থিতি মানুষকে ভয়ে রাখা, প্রতিবাদ দমন করা এবং বিদেশি প্রভাবিত শক্তির উদ্দেশ্য সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য করা হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণ ও ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সমর্থনের সঙ্গে এই সরকারের ক্ষমতায় থাকা নিয়মিত সমালোচনার বিষয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্য খুন, রাস্তায় ককটেল হামলা এবং যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। সরকারের তরফ থেকে এসব ঘটনার প্রতি স্পষ্ট নীতি, দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা পরিকল্পনা বা কঠোর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচিত সরকার না থাকায় জনগণের জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা আরও মনে করেন, আইনের শাসন না থাকলে সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে থাকে এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। দেশের নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি এই পরিস্থিতি জাতীয় অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩০টি হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। এই সংখ্যা নির্দেশ করছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অপরাধ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যা মানুষের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।