কারা হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ওয়াসিকুর রহমান বাবু। রোববার বিকেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় পরিবার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে অভিযোগ তুলেছেন। যদিও কারা কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে বলছে, হস্তান্তরের সময় তিনি হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েন।
সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত উল ফরহাদ জানান, গত সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তারের পর ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াসিকুরকে কাশিমপুর কারাগার–২ এ নেওয়া হয়। একটি মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হলে রোববার বিকেলে পুলিশের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিতে কারাগারে আসে।
তিনি বলেন, “বিকাল সোয়া চারটার দিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের সময় কারাগারের ফটকেই ওয়াসিকুর অচেতন হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার পান্থপথ এলাকায় একটি ‘ঝটিকা মিছিল’ চলাকালে ওয়াসিকুর রহমান বাবুকে লোকজন ধরে ফেলে। ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেসময় তাকে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় কলাবাগান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওই নেতা অভিযোগ করে বলেন, “আহত অবস্থায় গ্রেপ্তারের পর বাবু কোনো চিকিৎসা পাননি। গুরুতর জখম শরীর নিয়েই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সম্ভবত চিকিৎসার অভাবেই তার মৃত্যু হয়েছে।”
নিহতের পরিবার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের ফল। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জেলখানায় একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মৃত্যু ঘটছে, যা উদ্বেগজনক।
সমালোচকরা প্রশ্ন তুলছেন, যদি ওয়াসিকুরের শারীরিক অবস্থা এতটাই গুরুতর হয়ে থাকে, তবে তাকে আগে থেকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি কেন। কেন হস্তান্তরের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হলো এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব এখনও পাওয়া যায়নি।
ওয়াসিকুর রহমান বাবুর মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।