রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি হলে উভয় দেশের মধ্যে যে বাফার জোন তৈরি হবে, সেখানে জাতিসংঘের আওতায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা বাহিনী এই ধরনের মিশনে অংশ নেওয়ার সক্ষমতা রাখে এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব এলে সেনা পাঠাতে দেশ প্রস্তুত।
তিনি বলেন, “এ বিষয়ে এখনই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই। আশা করি উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হবে। যদি কোনো শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়, আমরা অবশ্যই অংশ নিতে চাইব।” বাংলাদেশের নীতি অনুযায়ী, শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ কেবল জাতিসংঘের নেতৃত্বে হবে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিদেশি সেনা মোতায়েনকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শুক্রবার ভ্লাদিভস্তকে অনুষ্ঠিত ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে তিনি বলেন, “যদি চলমান যুদ্ধের সময়ে কোনো দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠায়, আমরা তাদের ধ্বংসের বৈধ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করব।” তবে পুতিন শান্তি সংক্রান্ত সম্ভাব্য সমঝোতা হলে সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে বিদেশি সেনার প্রয়োজন হবে না বলেও উল্লেখ করেন।
পুতিন আরও বলেন, ন্যাটোর সম্প্রসারণে ইউক্রেনের পদক্ষেপ রাশিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রহণ করা হবে। তিনি ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছাকে বৈধ হিসেবে স্বীকার করেন।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যৌথভাবে জানিয়েছিলেন, যুদ্ধবিরতি বা শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে। বাহিনী লড়াইয়ে অংশ নেবে না, বরং পর্যবেক্ষণ ও শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটিকে শান্তিরক্ষা বাহিনীর জন্য এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের একটি সুযোগ হিসেবে দেখলেও, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কঠোর হুঁশিয়ারি এবং যেকোনো বিদেশি সেনা মোতায়েনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখার সতর্কতাকে সংবেদনশীল পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।