সর্বশেষ

কার পকেটে যাচ্ছে অর্থ?

এমপি নেই তবু এমপি প্রকল্পে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:১০
এমপি নেই তবু এমপি প্রকল্পে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন

বাংলাদেশে সংসদ নেই, নির্বাচিত এমপিরাও নেই। অথচ এমপি উন্নয়ন প্রকল্পে নতুন করে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব তোলা হয়েছে যা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন উঠেছে, এমপি না থাকলে এই টাকার প্রকৃত উপকারভোগী কারা?

 

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এমপি বরাদ্দ প্রকল্পের আওতায় জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অথচ প্রকল্পটি স্থগিত হওয়ার কথা থাকলেও নতুনভাবে আরও ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থাৎ দেড় বছরে ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ বাড়ছে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারাও এই অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কেউ কোনো জবাব দিচ্ছেন না।

 

বিশ্লেষকদের মতে, প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখন উন্নয়ন নয়, বরং অস্বচ্ছভাবে সরকারি তহবিল বিতরণ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বলছে, এই বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে “স্থানীয় চাহিদার” ভিত্তিতে। কিন্তু এমপি না থাকলে স্থানীয় চাহিদা নির্ধারণ করছেন কে? প্রশ্ন উঠছে, এই প্রকল্পের নামে আসলে কারা লাভবান হচ্ছেন।

 

অভিযোগ উঠেছে, কিছু এলাকায় বরাদ্দে বৈষম্য চোখে পড়ছে। যেমন, চট্টগ্রামে ৫১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হলেও মেহেরপুরে বরাদ্দ মাত্র ৫ কোটি টাকা। উন্নয়নের এই অসম বণ্টন কোন মানদণ্ডে নির্ধারিত, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন, এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রভাব ও ব্যক্তিগত স্বার্থে নেওয়া হচ্ছে।

 

সাবেক জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, আগের সরকারের সময় প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে সংসদীয় নজরদারি ও জবাবদিহির কাঠামো ছিল। সংসদে প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা হতো। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী কাঠামোয় সেই ব্যবস্থা নেই। ফলে ব্যয় ও বরাদ্দ সব কিছুই এখন নিয়ন্ত্রণহীনভাবে হচ্ছে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমপি প্রকল্পের মাধ্যমে অতীতে স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নের কিছু সুফল এলেও, এখন এটি ‘অর্থ লুটের বৈধ পথ’ হয়ে উঠছে। সরকারের ওপর আস্থা কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলছেন, জবাবদিহি ছাড়া উন্নয়নের নামে টাকা খরচ করা মানে জনগণের করের অর্থ অপচয়।

 

এই অস্বাভাবিক বরাদ্দের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, সে প্রশ্নও জোরালো হচ্ছে। কারণ এমপি না থাকলে প্রকল্পের অর্থ তদারকি ও বাস্তবায়নের দায়ভার কার ওপর, সেটি স্পষ্ট নয়।

 

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন যে এভাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়তে থাকলে উন্নয়নের সুফল জনগণ পাবে না, বরং সরকারি ঋণ ও ঘাটতি বাড়বে।

 

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখন জানতে চায়, ৮০০ কোটি টাকার এই নতুন বরাদ্দের অর্থ আসলে যাবে কোথায়, এবং কাদের পকেট ভারী করবে?

সব খবর

আরও পড়ুন

ভারতের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে: রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব

হিন্দুস্থান টাইমসে হর্ষবর্ধন শ্রীংলার কলাম ভারতের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে: রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না ভারত

দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্ধৃতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না ভারত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি ১৬ নাগরিক সংগঠনের

আইন-শৃঙ্খলার অবনতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি ১৬ নাগরিক সংগঠনের

বিশ্বশান্তির ছয় সারথীর মরদেহ আসছে শনিবার

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন হবে বিশ্বশান্তির ছয় সারথীর মরদেহ আসছে শনিবার

বাংলাদেশে নীরবে চলছে সংখ্যালঘু নিধন

শ্রীলংকা গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ বাংলাদেশে নীরবে চলছে সংখ্যালঘু নিধন

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে জরুরী তলব

নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে জরুরী তলব

‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনো পরাজিত শক্তি বদলাতে পারবে না’

বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে মানুষের দৃঢ় প্রত্যয় ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনো পরাজিত শক্তি বদলাতে পারবে না’

বাংলাদেশ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে

শ্রীলংকা গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ বাংলাদেশ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে