বাংলাদেশের বিচার বিভাগে শীর্ষ পদে পরিবর্তনের ক্ষণ ঘনিয়ে এসেছে। সংবিধান অনুযায়ী ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আগামী ২৭ ডিসেম্বর তার কর্মজীবনের শেষ দিন হলেও অবকাশকালীন ছুটির কারণে ১৮ ডিসেম্বরই তার বিচারিক দায়িত্বের সমাপ্তি ঘটবে। এর মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে—কে হচ্ছেন দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি?
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দেন। সাধারণত আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকেই এই নিয়োগ হয়ে থাকে। যদিও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কোনো রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগে থাকা অবস্থায় সরাসরি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
বর্তমানে আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন ছয়জন বিচারপতি। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৩ সালে বিএনপি সরকার তাকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আপিল বিভাগে যোগ দেন। তার অবসর নির্ধারিত ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাকেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে তুলনামূলক নবীন হলেও আলোচনায় রয়েছেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ আস্থাভাজন এবং বিএনপির সর্বশেষ শাসনামলে বিশ্বস্ততার পরীক্ষা দিয়ে বিচারক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে প্রচ্ছন্নভাবে বিএনপি-জামায়াতের হাতে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ থাকায় তার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪ সালের আগস্টে তিনি আপিল বিভাগে যোগ দেন এবং তার অবসর ২০২৮ সালে। ক্ষমতাসীনদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিবেচনায় তাকেও নিয়োগ দেওয়া হতে পারে—এমন আলোচনা চলছে।
সব মিলিয়ে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামকে এগিয়ে রাখা হলেও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে ঘিরেও জল্পনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।