সর্বশেষ

স্বাধীন ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড কোথায়, নেতৃত্বে কারা?

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৫
স্বাধীন ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড কোথায়, নেতৃত্বে কারা?
স্বাধীন ফিলিস্তিন

আন্তর্জাতিক মহল যখন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে এগোচ্ছে, তখন সামনে এসেছে দুটি মৌলিক প্রশ্ন—স্বাধীন ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড কোথায়? আর নেতৃত্ব দেবেন কে?

 

যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো ইসরায়েল ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে আলোচনায় নতুন মাত্রা এসেছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে কূটনীতিক হুসাম জোমলোট সতর্ক করে বলেছেন, “এটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের শেষ চেষ্টা হতে পারে।” তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ১৫৩টি দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি পশ্চিমা শক্তিধর দেশ।

 

তবে রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি পেলেও বাস্তবতা জটিল। ১৯৩৩ সালের মন্টেভিডিও কনভেনশন অনুযায়ী, একটি রাষ্ট্রের জন্য চারটি মানদণ্ড রয়েছে: স্থায়ী জনসংখ্যা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতা, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড এবং কার্যকর সরকার। ফিলিস্তিনের জনসংখ্যা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সক্ষমতা থাকলেও ভূখণ্ড ও নেতৃত্বের প্রশ্নে সংকট প্রকট।

 

১৯৪৮ সাল থেকে গাজা ও পশ্চিম তীর ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন ক্রমাগত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে খণ্ডিত করছে। পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিরা রাজধানী মনে করলেও সেটিও এখন বিচ্ছিন্ন।

 

নেতৃত্বের প্রশ্নে আরও জটিলতা। ১৯৯৪ সালে গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সাল থেকে দুই ভাগে বিভক্ত—গাজায় হামাস, পশ্চিম তীরে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। আব্বাসের বয়স এখন প্রায় ৯০, আর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৬ সালে। ফলে ৩৬ বছরের কম বয়সী কোনো ফিলিস্তিনি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। আইনজীবী ডায়ানা বুট্টু বলেন, “আমাদের নতুন নেতৃত্ব দরকার।”

 

বন্দি থাকা অবস্থায়ও জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন মারওয়ান বারঘৌতি। ২০০২ সাল থেকে ইসরায়েলি কারাগারে থাকা এই নেতাকে সম্প্রতি দুর্বল ও অসুস্থ দেখা গেলেও জরিপ বলছে, ৫০ শতাংশ ফিলিস্তিনি তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে চান।

 

অন্যদিকে, ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে বলেছেন, গাজা বা পশ্চিম তীরে হামাস কিংবা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ—কেউই ভূমিকা রাখবে না। তাঁর সরকারের এক মন্ত্রী বলেন, “ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বলে কিছু নেই, তাই কাউকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।”

 

এই বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি একটি প্রতীকী পদক্ষেপ হলেও, ফিলিস্তিনিদের কাছে সবচেয়ে জরুরি বিষয় যুদ্ধ বন্ধ করা। ডায়ানা বুট্টুর মতে, “রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বদলে আমরা চাই, এসব দেশ যেন হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।”

 

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ এখন দুটি প্রশ্নে আটকে—কে নেতৃত্ব দেবেন? আর কোন ভূখণ্ডে গড়ে উঠবে সেই রাষ্ট্র? আন্তর্জাতিক মহলকে এখন এই কঠিন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।

সব খবর

আরও পড়ুন

আইইএলটিএস পরীক্ষায় বড় ত্রুটি শনাক্ত

বাংলাদেশেও প্রশ্নফাঁস আইইএলটিএস পরীক্ষায় বড় ত্রুটি শনাক্ত

বেথলেহেমে দুই বছর পর জ্বলে উঠল বড়দিনের আলো

আশা, শোক ও সংকটের মাঝেই উৎসব বেথলেহেমে দুই বছর পর জ্বলে উঠল বড়দিনের আলো

ফ্যাক্টচেকার ও কনটেন্ট মডারেটরদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনা ফ্যাক্টচেকার ও কনটেন্ট মডারেটরদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল গোলাগুলি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল গোলাগুলি

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়

যুক্তরাজ্য সরকারের কড়াকড়ি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়

আইএমএফ-এর ঋণ নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বিক্রির পথে

আইএমএফ-এর ঋণ নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বিক্রির পথে

পাকিস্তান-সহ তিন দক্ষিণ এশীয় দেশ থেকে দূতাবাস তুলে নিচ্ছে ফিনল্যান্ড

পাকিস্তান-সহ তিন দক্ষিণ এশীয় দেশ থেকে দূতাবাস তুলে নিচ্ছে ফিনল্যান্ড

তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে অভিবাসী গ্রহণ বন্ধের ঘোষণা ট্রাম্পের

ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে হত্যার জের তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে অভিবাসী গ্রহণ বন্ধের ঘোষণা ট্রাম্পের