ইন্দোনেশিয়ায় সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী আন্দোলন দেশজুড়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মূলত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিতর্কিত সমর্থন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাবকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর পুত্র গিবরানকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করছেন, সংবিধান পরিবর্তন করে গিবরানকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা, নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। জাকার্তা, সুরাবায়া, যোগ্যাকার্তা, মাকাসারসহ বেশ কয়েকটি শহরে হাজার হাজার মানুষ “দুর্নীতিবাজ অভিজাতদের বিরুদ্ধে” স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবারতন্ত্র ও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ বাড়ছে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে হুমকির মুখে ফেলছে। তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই এটিকে ১৯৯৮ সালের ছাত্র আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখছেন, যা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পথ তৈরি করেছিল।
সরকার পক্ষ থেকে এখনো কোনো শক্ত প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি জানালেও, ভবিষ্যতে সংঘর্ষের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এই আন্দোলন ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইন্দোনেশিয়ার তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তারা শুধু ভোট নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়ও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চায়।