মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাং এলাকায় বড় ধরনের অভিবাসন অভিযান চালিয়েছে দেশটির অভিবাসন দপ্তর। জুয়ার আসরে চালানো এ অভিযানে ৩৭৭ বাংলাদেশিসহ মোট ৭৭০ জন বিদেশিকে আটক করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার জাতীয় সংবাদমাধ্যম বারনামা জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অংশ নেন অভিবাসন দপ্তরের ১০৬ জন কর্মকর্তা। এ সময় জালান বেদারা সড়কের একটি ভবন থেকে জুয়ার আসর ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিযানের খবরে হতচকিত হয়ে পড়েন অনেকে। কেউ ভবনের ছাদে উঠে পড়েন, কেউ টেবিলের নিচে বা বিভিন্ন দোকান–ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুকানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে আটক করা হয়।
অভিবাসন দপ্তরের এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক বসরি ওসমান জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ ধরে স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ আসছিল যে ওই ভবনে সামাজিক অনুষ্ঠানের নামে বিদেশিরা জুয়া ও অনলাইন খেলার আয়োজন করছে। এর ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়।
তিনি বলেন, “আমরা সেখানে সিসিটিভি নিয়ন্ত্রিত অনলাইন জুয়া খেলার ব্যবস্থা খুঁজে পেয়েছি। অভিযানের সময় সাতজন বিদেশিকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে।”
অভিযানের সময় মোট ২ হাজার ৪৪৫ জনের নথি পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন বিদেশি এবং ৮৪৫ জন মালয়েশিয়ার নাগরিক। যাচাই শেষে বিভিন্ন অভিবাসন আইন ভঙ্গের কারণে ৭৭০ বিদেশিকে আটক করা হয়।
বসরি ওসমান জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে—মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা, বৈধ কাগজপত্র না থাকা, ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার, কিংবা অনুমোদন ছাড়া অবস্থান করা।
অভিযানে আটক ৭৭০ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ৩৭৭ জন, মিয়ানমারের ২৩৫ জন, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৯ জন (১৭ পুরুষ ও ২ নারী) এবং অন্যান্য দেশের আটজন (২ পুরুষ ও ৬ নারী)।
আটকদের বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। তাঁদের প্রাথমিকভাবে পুত্রজায়া অভিবাসন দপ্তরে নেওয়া হয়। পরে বিস্তারিত তদন্তের জন্য বুকিত জলিল এবং লেংগেং ইমিগ্রেশন ডিপোয় স্থানান্তর করা হয়।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবৈধ বিদেশি শ্রমিক, জুয়ার আসর এবং অনিয়ম রোধে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা হবে। বিদেশিদের বৈধ কাগজপত্র রাখার এবং দেশের আইন মেনে চলার ওপরও কঠোরভাবে নজর দেওয়া হবে।