প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জনরোষের মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজধানী কাঠমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ধ্বংসযজ্ঞ এবং কারাগার বিদ্রোহে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থানে গিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে এবং নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত শাসনভার নিজেদের হাতে রেখেছে।
তরুণদের নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছে ডিজে থেকে সমাজকর্মী হয়ে ওঠা সুদান গুরুং। তার সংগঠন ‘হামি নেপাল’ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার প্রসারে কাজ করে আসছে। আন্দোলনের মূল দাবি—সুশাসন, জবাবদিহিতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি। তরুণদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে প্রধান বিচারপতি সুশিলা কারকি ও কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল বুধবার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও জেন-জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ওলি পদত্যাগের পর গুজব ছড়ায় তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে পরে জানা যায়, সেনাবাহিনীর হেফাজতে তিনি নেপালেই অবস্থান করছেন। সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিয়েছেন আরও অনেক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তা।
আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ও সাংবাদিকরা কাঠমান্ডুতে আটকা পড়েছেন। ত্রিভুবন বিমানবন্দর আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ। বাংলাদেশ সরকার বিশেষ বিমানে দল ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
পর্যটন খাতেও বিপর্যয় নেমে এসেছে। লক্ষাধিক বিদেশি পর্যটক হোটেলে আটকা, দূতাবাস ও হোটেলে হামলা হয়েছে। থানা, ক্যাসিনো, শপিংমল লুটপাটের শিকার। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে মোতায়েন রয়েছে। নেপাল এখন এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।