সর্বশেষ

ভয়ংকর খাদ্যদূষণ

বাংলাদেশে ৩ কোটি শিশু প্রতিবছর আক্রান্ত

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:০৬
বাংলাদেশে ৩ কোটি শিশু প্রতিবছর আক্রান্ত

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যে দূষণ ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গবেষণা অনুযায়ী, খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ মারা যায়। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি এবং বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি শিশু খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়।

 

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাবারে চার ধরনের দূষক থাকতে পারে—ভারী ধাতু, কীটনাশক ও জীবনাশকের অবশিষ্টাংশ, তেজস্ক্রিয়তা এবং জৈবদূষক। এ বছর ৮১৪টি নমুনা পরীক্ষায় অতিরিক্ত মাত্রায় সিসা বা সিসা ক্রোমেট পাওয়া গেছে। ইউনিসেফের জরিপে দেখা গেছে, দেশে সাড়ে ৩ কোটি শিশু সিসার সংক্রমণে আক্রান্ত। এমনকি ৫ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরেও সিসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।

 

কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাঁস-মুরগির খামারে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। মুরগিকে দেওয়া ওষুধ ৭ থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত শরীরে থাকে। কিন্তু ২৮ দিন পূর্ণ হওয়ার আগেই বাজারজাত করা হলে মানুষের শরীরে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করছে।

 

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস খাদ্যদূষণের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের সন্তান, বাবা-মা, আপনজন সবাই এর ভুক্তভোগী। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এই সংকট মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।” তিনি খাদ্যদূষণ প্রতিরোধে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দেন এবং সংশ্লিষ্টদের এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর প্রস্তাবনা জমা দিতে নির্দেশ দেন।

 

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউএমইএ সুইডেনের যৌথ গবেষণায় পানির ৮৭টি ও ২৩ ধরনের মাছের নমুনায় ৩০০ ধরনের ওষুধ, ২০০ ধরনের কীটনাশক ও ১৬ ধরনের পিএফএএস শনাক্ত হয়েছে। খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া জানান, সিসা মানবদেহে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক, যকৃত, কিডনি ও হাড়ে জমা হয়। শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এজন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় ১০ বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে।

 

বৈঠকে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে গিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে এবং পাঠ্যপুস্তকে খাদ্যনিরাপত্তা অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

সব খবর