সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। একই সঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। উভয় সংগঠনই ঘটনাটিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখছে।
সোমবার সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে রোববার ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে আটকে রেখে পরদিন তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয় এবং গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সম্পাদক পরিষদের মতে, এ ধরনের আচরণ অতীতের স্বৈরাচারী শাসনামলে সাংবাদিকদের ওপর রাষ্ট্রীয় দমন–পীড়নের ভয়াবহ স্মৃতিকে আবারও উসকে দেয়।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও নির্বিচার গ্রেপ্তার নিয়মিত ঘটনা বলে দাবী করে বলা হয় বর্তমান ঘটনাটি সেই দুঃখজনক বাস্তবতারই পুনরাবৃত্তি। সম্পাদক পরিষদ স্পষ্টভাবে জানায়, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে তা অবশ্যই প্রচলিত আইন ও ন্যায়বিচারসম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। অভিযোগ ছাড়াই ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া, সেখানে আটকে রাখা এবং পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সম্পাদক পরিষদ আরও স্মরণ করিয়ে দেয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বহু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অনেকে এখনো কারাগারে রয়েছেন। এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি আগেও জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। পরিষদ সব ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
এদিকে, একই ঘটনায় ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মামলা দেওয়া এবং পরে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করানো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত নিরাপত্তার পরিপন্থি।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আনিস আলমগীরের সঙ্গে যেন কোনো ধরনের অসম্মানজনক বা নাজেহাল করার আচরণ না করা হয়, সে আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধের দাবি জানান।