সর্বশেষ

আটকা পড়েছেন বহু সাংবাদিক

প্রথম আলো–ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হাদি সমর্থকদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ

রাজধানী ডেস্ক বিডি ভয়েস
প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৭
প্রথম আলো–ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হাদি সমর্থকদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত দেশের শীর্ষ দুটি গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার–এর কার্যালয়ে ভয়াবহ হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে সংঘটিত এই ঘটনায় দুই পত্রিকার বহু সাংবাদিক ও কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় ভবনের ভেতর ও ছাদে আটকা পড়ে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে মোতায়েন হন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শাহবাগ এলাকা থেকে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ মিছিল নিয়ে কারওয়ান বাজারের দিকে অগ্রসর হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তারা প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে পৌঁছে ভবনটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

 

হামলাকারীরা প্রথম আলো ভবনের জানালার কাচ ভেঙে ফেলে, অফিসের টেবিল-চেয়ার ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বাইরে এনে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একই সময় ভবনের ভেতরে থাকা সাংবাদিক ও কর্মীরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আটকা পড়েন।

 

 

রাত সাড়ে ১২টার পর পাশের ডেইলি স্টার কার্যালয়েও হামলা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধরা ভবনের সামনে ও ভেতরে অগ্নিসংযোগ করে। ডেইলি স্টার ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ভবনের ভেতরে থাকা অনেক সাংবাদিক ছাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

 

ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক আহমেদ দীপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জানান, তারা ছাদে আটকা পড়েছেন এবং ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে—যা গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করে। অন্য সাংবাদিকরাও জানান, ভেতরে তখনো অনেকে আটকা ছিলেন।

 

সাংবাদিক জাইমা ইসলাম ও ডেইলি স্টার ভবনে আগুন

 

ভবনটিতে আটকা পড়া ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জাইমা ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন, আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না। চারদিকে খুব বেশি ধোঁয়া। আমি ভেতরে আটকে আছি। তোমরা আমাকে মেরে ফেলছ। ডেইলি স্টারের সাংবাদিক রাকিবুল হক ও রাকসান্দা রহমান জানান, আগুন দেওয়ার পর অনেকেই আটকা পড়েছেন। সবাই ছাদে গিয়ে উঠেছেন।

 

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে। এ সময় সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা এলাকা ঘিরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

 

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কয়েকশ মানুষ একত্রিত হয়ে হামলায় অংশ নেয় এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায়। তবে হামলাকারীদের পরিচয় ও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

 

এই ঘটনায় দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

সব খবর

আরও পড়ুন

মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫

আর্টিকেল নাইন্টিনের উদ্বেগ মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধনী) অধ্যাদেশ ২০২৫

সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সিপিজে, পেন বাংলাদেশের বিবৃতি সাংবাদিক আনিস আলমগীরের অবিলম্বে মুক্তির দাবি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর

আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলার ঘটনায় সম্পাদক পরিষদ ও ডিআরইউর তীব্র নিন্দা

আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলার ঘটনায় সম্পাদক পরিষদ ও ডিআরইউর তীব্র নিন্দা

‘সরকারবিরোধী বক্তব্যের’ অভিযোগে সাংবাদিক আনিস আলমগীর গ্রেপ্তার

বিকেলে আদালতে তোলা হবে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্যের’ অভিযোগে সাংবাদিক আনিস আলমগীর গ্রেপ্তার

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকর্মীদের হামলা

আহত অন্তত পাঁচ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকর্মীদের হামলা

ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকের ওপর হাদির সমর্থকদের হামলা

ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকের ওপর হাদির সমর্থকদের হামলা

ইউনূস সরকারের প্রথম ১৫ মাসে ১,০৭৩ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার: টিআইবি

গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর সহিংসতা ২৩৮% বেড়েছে ইউনূস সরকারের প্রথম ১৫ মাসে ১,০৭৩ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার: টিআইবি

ব্যঙ্গ ও ভিন্নমতের বিরুদ্ধে মামলা ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ’

আর্টিকেল নাইনটিনের নিন্দা ব্যঙ্গ ও ভিন্নমতের বিরুদ্ধে মামলা ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ’