ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটার তালিকায় নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হলেও প্রার্থী হিসেবে তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে কম। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে নারী মাত্র ৬২ জন—মোট প্রার্থীর ১৩.১৬ শতাংশ।
মোট ভোটার ৩৯,৮৭৪ জনের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ১৮,৯৫৯ জন (৪৭.৬%) এবং পুরুষ ২০,৯১৫ জন (৫২.৪%)। ভোটার সংখ্যা প্রায় সমান হলেও প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা স্পষ্টভাবে পিছিয়ে।
সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী রয়েছেন মাত্র পাঁচজন। তাদের মধ্যে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ও উমামা ফাতেমা বড় দুটি প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে একমাত্র নারী প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জনের মধ্যে নারী রয়েছেন চারজন।
সম্পাদকীয় পদে কিছু অংশগ্রহণ থাকলেও ছাত্র পরিবহন, সমাজসেবা ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। সদস্য পদে ২৫ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আবাসিক হল নির্বাচনে মোট ১,১০৮ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী ১৮৮ জন (১৭%) এবং পুরুষ ৯২০ জন (৮৩%)। কেন্দ্রীয় নির্বাচনের তুলনায় হলে নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা বেশি হলেও তা এখনো সন্তোষজনক নয়।
দুই নারী প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন—বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের রেহেনা আক্তার ও শামসুন নাহার হলের লামিয়া আক্তার লিমা, উভয়েই বহিরাঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক পদে।
নারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভোটের মাঠে কাজ করা পুরুষদের তুলনায় তাদের জন্য বেশি চ্যালেঞ্জিং। উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ শেখ ইমতিয়াজ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের পর ভয়ের সংস্কৃতি ও মোরাল পুলিশিং বেড়েছে, যা নারীদের চলাফেরার স্বাধীনতা সীমিত করছে। ডাকসু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিফলন, যা নারীবান্ধব নয়।”