জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হলেও এখনো চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা অনিশ্চিত। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত তিনটি হলের ভোট গণনা শেষ হয়নি, ফলে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু করা যায়নি। এতে করে দিনভর অপেক্ষার পরও ফলাফল আজকের মধ্যেই প্রকাশ পাবে কি না তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফর এলাহী জানান, এখনও তিনটি হলের ভোট গণনা বাকি। এগুলো শেষ করেই কেন্দ্রীয় সংসদের গণনা শুরু করা হবে। তিনি বলেন, “কখন শেষ হবে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা টেবিল সংখ্যা বাড়িয়েছি, কাজও চলছে, তবে গতি সন্তোষজনক নয়।”
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভোট গণনায় অস্বাভাবিক দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৫টি ভোট দিয়েছেন। হল সংসদের ১৫টি ভোট গণনা করতেই একদিন লেগে গেছে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি ভোট হাতে গুনতে আরও বেশি সময় লাগবে। ফলে আজকের মধ্যেই ফল ঘোষণা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা সুলতানা আকতার শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ভোট গণনা বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, এনালগ পদ্ধতিতে ভোট গণনা করলে তিন দিনেও ফলাফল ঘোষণা সম্ভব হবে না। তার দাবি, “আমার সহকর্মী চারুকলার শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু প্রশাসনের ব্যর্থতা। যদি মেশিনে ভোট গণনা করা হতো, এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হলেও ব্যালট ও ওএমআর মেশিন নিয়ে বিতর্কের কারণে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। আর সেখান থেকেই শুরু হয় মূল জটিলতা। প্রথমে শুক্রবার দুপুরে ফলাফল ঘোষণার কথা থাকলেও এখন তা অনিশ্চয়তার মুখে।
একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, “ভোট গণনায় এভাবে দেরি হলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। শিক্ষার্থীদের আস্থার জায়গায় আঘাত হানবে।”
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২১টি হল কেন্দ্রের মধ্যে ১৯টির গণনা শেষ হয়েছে। তবে বাকি তিনটি হলের ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংসদের গণনা শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘ হচ্ছে।