আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতকে ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রফতানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি-২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে শর্তসাপেক্ষে ইলিশ রফতানি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগ্রহী রফতানিকারকদের আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে অফিস চলাকালীন সময়ে হার্ড কপিতে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর ও ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র এবং মৎস্য অধিদফতরের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় দলিল দাখিল করতে হবে।
প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রফতানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২.৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৫২১ টাকা (বর্তমান রেট অনুযায়ী)। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান পূর্বে আহ্বান ছাড়াই আবেদন করেছে, তাদেরও নতুন করে নির্ধারিত নিয়মে আবেদন করতে হবে।
গত বছর দুর্গাপূজায় ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হলেও পরে তা কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টনে নামিয়ে আনা হয়। এ বছর রফতানির পরিমাণ প্রায় অর্ধেক, যা নিয়ে রফতানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজার সময় ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। পদ্মার ইলিশকে ‘সেরা স্বাদ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা উৎসবের রান্নায় অপরিহার্য। এ রফতানি সিদ্ধান্তকে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন অনেকেই। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, রফতানির অনুমোদন দেরিতে আসায় সময়সীমা সংকুচিত হয়েছে, ফলে বড় পরিসরে সরবরাহে সমস্যা হতে পারে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের দাম ইতিমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে ইলিশের দাম ৯০০ থেকে ২,২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে, যা রফতানির ঘোষণার পর আরও বাড়তে পারে।
এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে নানা মতামত দেখা যাচ্ছে। কেউ একে ‘ইলিশ কূটনীতি’ বলছেন, আবার কেউ অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।