চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে এক তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র স্থানীয় নেতা আমিন হোসেন সৈকতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার গল্লাক বাজার এলাকায় নিজ বাসা থেকে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম নিশ্চিত করে জানান, মামলা ও আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলমান বলেও তিনি জানান।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় এক মাস আগে। কচুয়া উপজেলার রহিমা নগরের ওই তরুণী অভিযোগ করেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এনসিপি নেতা আমিন হোসেন সৈকত তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় গত ৫ অক্টোবর থেকে তিনি সৈকতের বাড়িতে অবস্থান নেন এবং বিয়ের দাবি করেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। এনসিপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা আলোচনায় বসেন। অভিযোগ আছে, সমঝোতার অংশ হিসেবে মেয়েটির পরিবারকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তবে তরুণীর পরিবার ও তিনি নিজেই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার দাবি করেন।
বুধবার গণমাধ্যমে ওই তরুণী বলেন, “আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বারবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। এখন বিয়ের কথা অস্বীকার করছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। এ ঘটনার ন্যায়বিচার চাই। আমাকে এখনো দলের নেতারা ফোনে ভয় দেখাচ্ছেন।”
এদিকে এলাকায় গ্রেপ্তারকে ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমিন হোসেন সৈকত এলাকায় এনসিপি-র নেতা পরিচয়ে সক্রিয় ছিলেন। অভিযোগ ওঠার পর থেকেই লুকিয়ে ছিলেন বলেও দাবি করেন কয়েকজন।
পুলিশ জানায়, মামলা তদন্তাধীন রয়েছে এবং ভুক্তভোগীর নিরাপত্তার বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঘটনা প্রকাশের পর স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ‘রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।