ভাদ্র মাসের তীব্র তাপপ্রবাহে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত। স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিললেও তা অল্প সময়ের জন্য, এরপরই আবার রোদে পুড়ছে নগরবাসী। এই পরিস্থিতিতে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। যদিও কিছু এলাকায় সমস্যা সাময়িকভাবে সমাধান হয়েছে, তবে হাজারীবাগ, এনায়েতগঞ্জ, জিগাতলা, টালি অফিসসহ অঞ্চল-২-এর বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনও পানির সংকটে ভুগছেন বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, দিনে পানি পাওয়া যাচ্ছে না, মাঝরাতে কিছু সময়ের জন্য ওয়াসার লাইনে পানি আসে। হাজারীবাগের এনায়েতগঞ্জের বাসিন্দা হাসান মিয়া বলেন, “প্রায় ১০-১৫ দিন ধরে পানি পাচ্ছি না। শুনেছি পাম্প নষ্ট থাকে, প্রেশার কম থাকে। এই সংকট আর সহ্য হয় না। এখানে একটি নতুন পানির পাম্প বসানো জরুরি।”
হাজারীবাগ পার্ক এলাকার সাজ্জাদ হোসেন জানান, “সারাদিন টানামোটর চালিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পানি পাই না। মাঝরাতে ২টার পর পানি এলেও ফজরের আগেই গতি কমে যায়। বাধ্য হয়ে দুই দিন পরপর পানির গাড়ি ডেকে সাময়িক সমাধান করি।”
জিগাতলার মুবাসশির রহমান প্রিয় বলেন, “এলাকায় প্রায় সময়ই পানির সমস্যা হয়। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
এদিকে ঢাকা ওয়াসা জানিয়েছে, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি নেই, তবে কিছু এলাকায় সাময়িক সমস্যা রয়েছে। ওয়াসার দাবি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং অতিরিক্ত গরমে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় গভীর নলকূপের সংখ্যা কম থাকাও একটি বড় কারণ।
ওয়াসার অঞ্চল-২-এর সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, “আমরা সমস্যাটি সম্পর্কে অবগত। নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সাইটে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে, তবে নির্দিষ্ট সময় বলতে পারছি না।”
এই সংকটের দ্রুত সমাধানে নগরবাসী কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে। পানির মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি।