সর্বশেষ

বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ঢাকাঃ দুই দশকে অবস্থার চরম অবনতি

প্রকাশিত: ২৯ অগাস্ট ২০২৫, ২১:৪৪
বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ঢাকাঃ দুই দশকে অবস্থার চরম অবনতি

গত দুই দশকে বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়েছে ঢাকায়। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ঢাকার বাতাসে পিএম২.৫ (বিপজ্জনক সূক্ষ্ম কণা) এর গড় ঘনত্ব ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৮০.২ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার ১৬ গুণ বেশি। ফলে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষিত শহরের তালিকায় উঠে এসেছে।

 

২০০৮ সালে ঢাকায় পিএম২.৫ এর গড় ঘনত্ব ছিল ৪৮.৬, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০.২-এ। অর্থাৎ মাত্র ১৫ বছরে দূষণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৬৫%। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৃদ্ধির পেছনে দায়ী যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলা, শিল্প-কারখানার বর্জ্য এবং অপরিকল্পিত নগরায়ন।

 

আইকিউ এয়ার-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের ৭টি শহরের বাতাসে দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত সীমার ১০ গুণেরও বেশি ছিল। এর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২৩ সালে পিএম২.৫ এর গড় ঘনত্ব ছিল ৭৯.৯, যা দেশকে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ দূষিত দেশের তালিকায় রেখেছে।

 

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এই মাত্রার দূষণ মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃদযন্ত্র এবং স্নায়ুতন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছে হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, স্ট্রোক এবং হৃদরোগ।

 

পরিবেশবিদরা বলছেন, দূষণ কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে—পরিবহন খাতে জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানো, নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ, শিল্প-কারখানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সবুজায়ন। পাশাপাশি, বায়ুমান পর্যবেক্ষণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগও জরুরি।

 

ঢাকার বায়ুদূষণ শুধু স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কর্মক্ষমতা হ্রাস, চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতার ক্ষতি—সব মিলিয়ে এটি একটি জাতীয় সংকটে রূপ নিচ্ছে।

সব খবর