সর্বশেষ

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস : বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি

হাত-পা বাঁধা লাশ, অশ্রুসিক্ত বিজয়—জাতিকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩০
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আমরা প্রকাশ করছি বিশেষ ধারাবাহিক “রক্তে রাঙা বিজয় আমার”। এতে থাকছে গবেষণাধর্মী নিবন্ধ, মতামত, বিশ্লেষণ, কবিতা, গল্প ও সৃজনশীল রচনা যেখানে উঠে আসবে ১৯৭১-এর ইতিহাস, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রাম ও বিজয়ের চেতনামূলক আলোচনা। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নৃশংস পরিকল্পনার শিকার হয়েছিলেন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সংঘটিত সেই পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ আজও আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তাঁদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে “রক্তে রাঙা বিজয় আমার”-এ লিখছেন মহুয়া মোহাম্মদ।
হাত-পা বাঁধা লাশ, অশ্রুসিক্ত বিজয়—জাতিকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা

১.

১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর দিন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বাঙালির বিজয় যখন সুনিশ্চিত তখন বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একের পর এক হত্যা করা হয়। শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ বেছে বেছে জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যা করে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর আলবদর, রাজাকাররা। দীর্ঘ ৯ মাসের সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় চলে আসছিল। নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করতে নিষ্ঠুর পরিকল্পনা সাজায় হানাদার বাহিনী। তাই তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগিতায় একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর বহু গুণীজনকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির মহান মানুষদের স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আজ জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। উড়বে শোকের প্রতীক কালো পতাকা। প্রতি বছরের মতো এবারও মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবী কৃতী সন্তানদের অবনত চিত্তে শ্রদ্ধা জানাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। 

 

২. 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় শুরুতেই মনে নানা প্রশ্ন জাগে। Intellectual শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধিজীবী বললে বোঝায় বুদ্ধি দিয়ে যারা জীবিকা নির্বাহ করে। যেমন কৃষিজীবী কৃষি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। নিছক জীবিকা নির্বাহ করাই Intellectual-এর কাজ নয়। বুদ্ধিজীবী- ১. সমাজ ও সংস্কৃতি সচেতন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষ সুশিক্ষিত মানুষ, যারা বুদ্ধির বলে বা বুদ্ধির কাজ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। ২. জ্ঞান বা বুদ্ধিকৌশলে কাজ সম্পাদন করে এমন। বুদ্ধিজীবীর প্রধান সম্পদ তাঁর বিবেক। বিবেকতাড়িত মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। যদিও প্রতিবাদের ধরনে ভিন্নতা রয়েছে। বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে, বুদ্ধিজীবী সামাজিক ও রাষ্ট্রিক সঙ্কটকালে বৌদ্ধিক পরামর্শ দানের মাধ্যমে যথার্থ দিকনির্দেশকারী পন্ডিত।

 

৩.

কোনো মৃত্যুর তাৎপর্য কিংবা মূল্য অন্য মৃত্যুর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। প্রতিটি জীবনই অমূল্য। বুদ্ধিজীবীরা কেন হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলেন, তা বোঝার জন্য গভীর পাণ্ডিত্যের প্রয়োজন নেই। একাত্তরে ত্রিশ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা তাই বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেই বিশেষ তাৎপর্যময় দিকটি হলো পাকিস্তানি শাসকেরা বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিল আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নিঃস্ব করার দুরভিসন্ধি থেকে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে। চরম বিপর্যয় আসন্ন, পরাজয় একেবারেই সন্নিকটে- তখনই তারা সেই পরিকল্পনা কার্যকর করে। তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে নিয়ে হত্যা করে। তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে এভাবেই অন্ধকার করার পাঁয়তারা করেছিল। 

 

৪.

জাতির সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১ সালে জাতিকে বুদ্ধি পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে আমাদের বিজয়কে দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করেছিলেন। পাকিস্তান আমলে এ অঞ্চলের বুদ্ধিজীবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তান রাষ্ট্র এ অঞ্চলের জনগণকে ভাগ্যবিড়ম্বিত করে রেখেছে। নতুন রাষ্ট্র সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সেই সময় জনগণ যে স্বপ্ন দেখেছিল তা অচিন্তনীয়ভাবে স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এদের লেখালেখি ও বলাবলির ওপর গভীর নজর রেখেছে। তাই দেখা গেল ’৭১-এর ২৫ মার্চের কালরাতে সেনা অভিযান শুরু হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ায় নাম-ঠিকানা ধরে প্রগতিশীল শিক্ষকদের কয়েকজনকে বেছে বেছে হত্যা করা হল। পাকস্তান সামরিক বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের অভিযান শুধু ২৫ মার্চের কালরাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ধরেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় খ্যাতনামা শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক ও চিন্তাশীল মানুষকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার এ অভিযান অত্যন্ত ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে থাকে ৭১-এর ১০ ডিসেম্বর থেকে। ততদিনে পাকিস্তানিরা বুঝে ফেলেছিল তাদের পরাজয় অত্যাসন্ন। পরাজিত বাহিনী পরাজয়ের সময় পশ্চাদপসরণকালেই ‘পোড়া মাটি’ নীতি গ্রহণ করে। যে জনপদ দখলে রাখা যাবে না, সেই জনপদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়াই হচ্ছে অত্যাসন্ন পরাজয়ের মুখোমুখি শত্রু পক্ষের কাজ। ব্যাপারটি অবশ্য এমন নয় যে, এই ‘পোড়ামাটি’ নীতি কেবল যুদ্ধের শেষ সময় গ্রহণ করা হয়েছিল। কার্যত ৯ মাস ধরেই তারা ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। ঘড়ির কাঁটা যখন দ্রুত তাদের পরাজয় মুহূর্তের দিকে এগিয়ে চলল তখন তারা সিদ্ধান্ত নিল এ জনপদের সেরা সন্তানদের সংহার করার। একটি দেশের বস্তুগত সম্পদের ক্ষতি হলে তা বাড়তি শ্রমের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। কিন্তু জাতির মননের সম্পদকে ধ্বংস করা হলে তা সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়। এর জন্য কয়েক প্রজন্মের সময়কাল অতিবাহিত হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারটি বুঝেশুনেই পাকিস্তানিরা এবং তাদের দোসররা সচেতনভাবে ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

 

৫.

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের তখন চূড়ান্ত পর্যায়। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তখন প্রায় পর্যুদস্ত। তখনই ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তালিকা ধরে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘৃণ্যতম নীল নকশার বাস্তবায়ন করে ঘাতক চক্র। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিজয়ী বাঙালি জাতি যাতে মেধাশূন্যতার কারণে ভবিষ্যতে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। এ সময় সান্ধ্য আইনের মধ্যে রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে অপহরণ করে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নিয়ে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। 

 

৬.

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর চারদিকে যখন পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের রব, ঠিক তখনই ঘাতকরা মুনীর চৌধুরী, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সন্তোষ ভট্টাচার্য, শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসেন, আবুল খায়ের, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, মনিরুজ্জামান, আনোয়ার পাশা, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, রশিদুল হাসান, সিরাজুল হক খান, ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বি, নাজমুল হক, খন্দকার আবু তালেব, ডা.আমির উদ্দিন, সাইদুল হাসান প্রমুখ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ ছাড়া অনেক বুদ্ধিজীবীকে তুলে নিয়ে যায় হানাদাররা। যাদের আজ পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি। এরপর থেকেই প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে আসছে দেশবাসী।

 

৭.

বাংলাপিডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩ জন সাংবাদিক, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবী, ১৬জন শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী। প্রতি বছরের মতো এবারও ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৭২ সালে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সঙ্কলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গঠিত বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব হয়নি। কারণ ফরমান আলীর টার্গেট ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে মেরে ফেলা।

 

৮.

বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশন প্রণীত একটি দলিল থেকে জানা গেছে, বুদ্ধিজীবী হত্যায় যারা ঘৃণ্য ভূমিকা রাখে তাদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার রাজা, ব্রিগেডিয়ার আসলাম, ক্যাপ্টেন তারেক, কর্নেল তাজ, কর্নেল তাহের, ভিসি প্রফেসর ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন, ড. মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার, আশরাফুজ্জামান চৌধুরী ও মাইনুদ্দিন। এদের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

 

৯.

বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন, এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে। ওই কমিশনের আহবায়ক ছিলেন চলচিচত্রকার জহির রায়হান যিনি নিখোঁজ হন ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেন ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্ত তার এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।

 

১০.

দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হাত-পা-চোখ বাঁধা ক্ষতবিক্ষত লাশ আজও অশ্রু ঝরায় স্বজন আর পুরো বাংলাদেশের চোখে। তাই বিনম্র এবং শ্রদ্ধায় আজ জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকান্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর ঘটনা যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতিবছর এই দিবসটি জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে। 

 

১১.

বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আজকের এই দিনে আমরা আবারো জাতির এই মহান সন্তানদের শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করি। কিন্তু যাঁরা নিজেদের জ্ঞান-মনীষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, আলোকিত করেছেন, তাঁদের বছরের একটি দিন স্মরণ করাই যথেষ্ট নয়। আমাদের অনুধাবন করতে হবে কেন এই মহৎপ্রাণ মানুষগুলো জীবন দিয়েছেন। তাঁদের চিন্তা ও আদর্শ কী ছিল। আজ পুরো জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছে সেইসব সূর্যসন্তানকে- যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ,আমরা পেয়েছি স্বাধীন মানচিত্র। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আজ যে দিবস পালিত হচ্ছে তা সার্থক হবে, যদি আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক বনিয়াদ আরও শক্তিমান করার কাজে ব্রতী হই। তাঁরা যে উন্নত চিন্তা ও সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই পথ ধরেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, এই হোক শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অঙ্গীকার।

 

(তথ্যসূত্র : বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ইন্টারনেট) 

 

লেখকঃ মহুয়া মোহাম্মদ, গণমাধ্যম কর্মী

১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

 

সব খবর

আরও পড়ুন

যে ইতিহাস শিক্ষক জানতেন পাকিস্তান টিকবে না

বুদ্ধিজীবী দিবসে একটি ব্যক্তিগত স্মৃতি যে ইতিহাস শিক্ষক জানতেন পাকিস্তান টিকবে না

ডিসেম্বরের কাছে ফিরে যাওয়া: তরুণদের বাংলাদেশ ও এক অসমাপ্ত স্বপ্ন

মতামত ডিসেম্বরের কাছে ফিরে যাওয়া: তরুণদের বাংলাদেশ ও এক অসমাপ্ত স্বপ্ন

শিল্পীর রেখায় মুক্তির স্বপ্ন

রঙতুলির বিদ্রোহ শিল্পীর রেখায় মুক্তির স্বপ্ন

নিখোঁজ এস এম কামরুজ্জামান সাগরকে ঘিরে উদ্ভূত উদ্বেগ ও জাতির দায়বদ্ধতা

মানবাধিকার সংকটের নতুন আতঙ্ক নিখোঁজ এস এম কামরুজ্জামান সাগরকে ঘিরে উদ্ভূত উদ্বেগ ও জাতির দায়বদ্ধতা

মুক্তিযুদ্ধের নয়া বয়ান: জামায়াতের সহীহ ইতিহাস

ব্যঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের নয়া বয়ান: জামায়াতের সহীহ ইতিহাস

ডিসেম্বর আসিলেই যাহাদের চুলকানি বাড়ে

ব্যঙ্গ কলাম ডিসেম্বর আসিলেই যাহাদের চুলকানি বাড়ে

তারেক জিয়ার ঘরে ফেরা নিয়ে কেন এত অনিশ্চয়তা?

মতামত তারেক জিয়ার ঘরে ফেরা নিয়ে কেন এত অনিশ্চয়তা?

ফেব্রুয়ারির ৮ কিংবা ১৪ তারিখ নিয়ে গুঞ্জন, অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার প্রশ্নে বাড়ছে জাতীয় বিতর্ক

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির ৮ কিংবা ১৪ তারিখ নিয়ে গুঞ্জন, অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার প্রশ্নে বাড়ছে জাতীয় বিতর্ক