সর্বশেষ

মতামত

পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলে নিরাপত্তা ঝুঁকি, সতর্ক নজরদারি জরুরি

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩:৪১
পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলে নিরাপত্তা ঝুঁকি, সতর্ক নজরদারি জরুরি

বাংলাদেশের মেগা অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, কর্নফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দেশের বিভিন্ন ফ্লাইওভার শুধু দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করেনি, বরং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় দেশের অবস্থান দৃঢ় করেছে। জাপান, চীন ও কোরিয়ার মতো বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পগুলোর সঙ্গে যুক্ত থেকেছে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।

 

তবে সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ উঠেছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক ও অন্যান্য গোষ্ঠী মেগা প্রকল্পগুলোর সুনামের ওপর আঘাত আনতে পরিকল্পিত নাসকতা বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে মেট্রোরেলের নাট ঢিলা হওয়া, ফ্লাইওভার বা সেতুর অব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি। যদিও এই অভিযোগগুলো এখনও যাচাইযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত নয়, তবে সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেগা প্রকল্পগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনসেবা, এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতার প্রতীক। রক্ষণাবেক্ষণ বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হলে বা পরিকল্পিতভাবে ক্ষতি করা হলে তা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীর আস্থা হারানো এবং সহযোগিতার ক্ষতি হওয়াও এই পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে।

 

সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো—প্রকল্পগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা। প্রকল্পগুলোর অবস্থার স্বচ্ছ প্রতিবেদন তৈরি করে জনগণ ও মিডিয়াকে সঠিক তথ্য দেওয়া জরুরি, যাতে বিভ্রান্তি বা গুজবের বিস্তার রোধ করা যায়।

 

সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্বের ক্ষেত্রেও সতর্কতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং মিডিয়াকে প্রকল্পের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টায় অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলের দায়িত্ব রয়েছে।

 

দেশের মেগা প্রকল্পগুলো শুধুমাত্র অবকাঠামো নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের প্রতীক। এগুলো সুরক্ষিত রাখা, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা এবং সতর্ক নজরদারি চালানো—সবই দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য অপরিহার্য। জনগণকে সচেতন করা, প্রকল্প পরিচালকদের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাখা এবং সরকারের পর্যবেক্ষণ কার্যকর রাখা—এই তিনটি উপায়ে মেগা প্রকল্পগুলো দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে উপকারী হবে।

 

সর্বোপরি, মেগা প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা, কার্যকারিতা এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সুনাম রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক নজরদারি, সচেতন জনগণ ও দায়িত্বশীল মিডিয়ার সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।

সব খবর

আরও পড়ুন

রাজনীতির সার্কাসে সোনার বাংলায় নামিতেছে শীত, আতঙ্কের জনপদ

ব্যঙ্গ কলাম রাজনীতির সার্কাসে সোনার বাংলায় নামিতেছে শীত, আতঙ্কের জনপদ

রয়টার্সের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে হুমকি—বাংলাদেশে গণমাধ্যম স্বাধীনতা নতুন সংকটে

মতামত রয়টার্সের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে হুমকি—বাংলাদেশে গণমাধ্যম স্বাধীনতা নতুন সংকটে

দূষিত পানি খেয়ে মৃত্যুঝুঁকিতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা

চট্টগ্রাম কারাগারে ভয়ংকর মানবিক সংকট দূষিত পানি খেয়ে মৃত্যুঝুঁকিতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা

শেখ হাসিনার নীরব প্রত্যাবর্তন

রহমান বাঙ্গালি’র মতামত কলাম শেখ হাসিনার নীরব প্রত্যাবর্তন

নারীপ্রেমে উন্মত্ত জামায়াত: তিন শূন্যের মহাপরিকল্পনা

ব্যঙ্গ কলাম নারীপ্রেমে উন্মত্ত জামায়াত: তিন শূন্যের মহাপরিকল্পনা

নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় হচ্ছে না নির্বাচন

মতামত নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় হচ্ছে না নির্বাচন

শান্তির দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতি কেন?

মতামত শান্তির দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতি কেন?

আর্মচেয়ার প্রবৃত্তির আর্মচেয়ার নেশন: ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনোকালে?

মতামত আর্মচেয়ার প্রবৃত্তির আর্মচেয়ার নেশন: ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনোকালে?