সর্বশেষ

বদরুদ্দীন উমরের দাবি বনাম ঐতিহাসিক সত্য

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজনীতিবিদ ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর দিন ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা চালান। একাত্তরের শহীদদের আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এই প্রয়াস নিছক ব্যক্তিগত মতামত নয়, বরং প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার একটি সুপরিকল্পিত কৌশল। এই লেখায় তাঁর অসত‍্য ও বিকৃত বক্তব্যের যুক্তি খণ্ডন এবং ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধরেছেন আহমেদ সাঈদ।
বদরুদ্দীন উমরের দাবি বনাম ঐতিহাসিক সত্য

“একাত্তরের চেতনা বলে কিছু নেই” বলে মন্তব্য করেছেন বদরুদ্দীন উমর। ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথার সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন “শেখ মুজিব পাকিস্তানের জেলে বসে থেকেছেন”। সাক্ষাৎকারটি ইউট্যুবে প্রচার করা হয় ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫। এ সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, একাত্তরে যুদ্ধের আগে মানুষ ভেবেছিল দেশ স্বাধীন করে সবাই দুধে-ভাতে থাকবে। সেই দুধ-ভাত পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে তিনি একাত্তরের চেতনা বলে মনে করেন। সেই দুধ-ভাত হয়নি তাই একাত্তরের চেতনা বলেও কিছু নেই। উক্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, “শেখ মুজিবের সাড়ে তিন বছরের শাসন থেকে মানুষ কিছুই পায়নি”। এ সাক্ষাৎকারে তিনি যে কয়টা কথা বলেছেন তার প্রতিটিকে মিথ্যা এবং অপব্যাখ্যা বলা যায়। সব কয়টি মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করতে গেলে কলেবর অনেক বড় হয়ে যাবে। এখানে শুধু উল্লেখিত তিনটি মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করা যাক।

 

মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল সাতচল্লিশ সালে দেশভাগের আগেই। যখন পাকিস্তান সৃষ্টির কথাবার্তা চলছে, তখন বাংলাকে পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেছিলেন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালের ৭ জুলাই কলকাতার ‘ইত্তেহাদ’ পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর এই দাবি প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ১৯৪৮ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান। সেই থেকে শুরু তারপর ধাপে ধাপে এগিয়ে চলে বাংলাদেশ তৈরির সংগ্রাম। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ গঠন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যায়।

 

৫২ সালে বাঙালি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার আদায় করে। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে প্রথম গণতন্ত্রের পক্ষে সরাসরি রায় দেয় বাংলার জনগণ। বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা এবং তার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান; ৭ই মার্চের ভাষণ – এসবই নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশের রূপরেখা – বাঙালির রাজনৈতিক চেতনা। বাংলার দামাল ছেলেরা এই চেতনা বুকে ধারণ করে কণ্ঠে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্তিশালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। সাতচল্লিশ থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত পুরো সময়টি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থানের সময়। এ সময়ে বাংলার মানুষ সবাই মিলেমিশে দুধেভাতে থাকতে চেয়েছিল। চেয়েছিল সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। ২৪ বছরের এই দীর্ঘ সময়কালে বাংলার মানুষ যা যা ভেবেছে, যা যা চেয়েছে তা লিপিবদ্ধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পরে মাত্র দশ মাসের মধ্যে রচিত পবিত্র সংবিধানে। 

 

বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, “শেখ মুজিব পাকিস্তানের জেলে বসে থেকেছেন”। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের জেলে বসে থাকবেন কী করে? এ কথার মানে কী? তিনি কি পাকিস্তানি শাসকদের তাঁকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের জেলখানায় বসিয়ে রাখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন? তিনি অনুরোধ করলেই বা তাঁর শত্রুরা তাঁর কথা শুনবেন কেন? বদরুদ্দীন উমরের কাছে কি এমন কোন প্রমাণ ছিল? বরং উল্টো প্রমাণ ছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের পাতায় পাতায়।

 

২৬ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেন, “তিনি (শেখ মুজিব) এ দেশের ঐক্য ও সংহতির ওপর আঘাত হেনেছেন – এই অপরাধের শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে”। ১ আগস্ট তৎকালীন পাকিস্তানের মিত্রদেশ ইরানের কায়হান ইন্টারন্যাশনাল পত্রিকার রিপোর্টে বঙ্গবন্ধুর বিচার যে আসন্ন তার ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়, “আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশদ্রোহের অভিযোগে শেখ মুজিবের বিচার শুরু হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এতে সর্বোচ্চ শাস্তি ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড”। ৮ আগস্ট সানডে টাইমসকে ইয়াহিয়া খান বলেন, “আজকের পর শেখ মুজিবের জীবনে কী হবে, সে বিষয়ে তিনি ওয়াদা করে কিছু বলতে পারেন না। “মুজিবকে কালই আমি গুলি করছি না”, শিরোনামে এ খবর ছাপায় পত্রিকাটি।

 

পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর বন্দিদশার বিস্তারিত পাওয়া যায় গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে দ্য ডেইলি পাকিস্তানের সাংবাদিক তাহির মাহমুদ চৌধুরীকে দেয়া রাজা আনার খানের সাক্ষাৎকারে। রাজা আনার খান ছিলেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের (সিআইডি) কর্মকর্তা। ৮৮ বছর বয়স্ক আনার খান বর্তমানে বসবাস করেন রাওয়ালপিন্ডিতে। ৭১ সালে তাকে সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামী সাজিয়ে পাঠানো হয় মিয়ানওয়ালী জেলে। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাঁর দিনলিপি প্রতিদিন ঊর্ধতন কর্তাদের কাছে পাঠানো ছিল আনার খানের দ্বায়িত্ব। আনার খান জানান, এমনকি তাঁকে সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখতে দেয়া হত না। সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুকে মিয়ানওয়ালী জেলের অভ্যন্তরে হত্যা করার পরিকল্পনার কথা জানান খোদ পাকিস্তানি এই আনার খান। জেনেশুনে বদজ্ঞানী বদরুদ্দীন উমর বঙ্গবন্ধুর বন্দিদশা সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বেড়িয়েছেন। বদরুদ্দীন উমর এসব জানেন না, তা নয়। তিনি এসব অস্বীকার করেন, মিথ্যে বলে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করে দিতে চেয়েছেন। তার এসব কুতর্ক শক্তিশালী করেছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের। সমাজতন্ত্রের আড়ালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে মৃত মুসলিম লীগের ভাবধারা টিকিয়ে রাখতে আমৃত্যু কাজও করে গেছেন।

 

২০২৪ সালের জুলাই ষড়যন্ত্রের আগে মুক্তিযুদ্ধের চার মূল চেতনাঃ জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। মুক্তিযুদ্ধের পরে বাহাত্তর সালে সংবিধান রচনার সময় আওয়ামী লীগ ছাড়াও কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপসহ অনেক রাজনৈতিক দল ছিল। তাঁদের সকলের অংশগ্রহণেই তৈরি হয়েছিল বাংলার প্রথম সংবিধান। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী - এরাই শুধু বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনা নিয়ে ভিত্তিহীন বিতর্ক করে। এরা নতুন প্রজন্মের মানুষকে বিভ্রান্ত করে ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজের দলে টানতে চায়। 

 

“শেখ মুজিবের সাড়ে তিন বছরের শাসন থেকে মানুষ কিছুই পায়নি” – বদরুদ্দীন উমরের এই উক্তিটিও অসত্য। বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সমকালে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র পরিচালনার কিছু অর্জনের কথা এখানে তুলে ধরলেই বোঝা যাবে বদরুদ্দীন উমরের এই উক্তি কতটা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রথমে দেখা যাক সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতিঃ ৮০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত, ৮৫% মানুষ গ্রামে বাস করতো, জাতীয় আয়ের অর্ধেকেরও বেশি আহরিত হত কৃষি খাত থেকে, পৌনঃপুনিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো, শূন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার – পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী টাকা পুড়িয়ে দেয়, লুট করে নিয়ে যায় সকল স্বর্ণ, রত্ন এবং মূল্যবান দলিল-দস্তাবেজ, বৈদেশিক মুদ্রার শূন্য রিজার্ভ, দেশীয় পুঁজিপতি ও দক্ষ ব্যবস্থাপকের অভাব, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়া, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশের বৈরি অবস্থান, খাদ্য সাহায্য নিয়ে বিদেশিদের নোংরা রাজনীতি, পরাজিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হীন কূটনীতি, শূন্য বিদেশি বিনিয়োগ, এবং, অর্থনীতিতে সামান্য ফরওয়ার্ড এবং ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ। 

 

সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধুর নেয়া রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পদক্ষেপের উল্লেখ করলে বোঝা যাবে যে তিনি দেশ গঠনে কতটা মনোযোগী ছিলেন এবং সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর নেয়া পদক্ষেপ সমূহের মধ্যে কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলোঃ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা – এই চার মূলনীতি গ্রহণ এবং মাত্র এক বছরের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন, জনগণকে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক ঘোষণা, গণমুখী জনপ্রশাসন গঠন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৈরি, পরিকল্পনা কমিশন গঠন, শিক্ষা কমিশন গঠন, রুরাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস গঠন, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ণ, মুক্তিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, মাত্রা ও প্রকৃতি নির্ধারন, নারী জাগরণ ও ক্ষমতায়নের জন্য কর্মসূচী গ্রহণ। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিধৃত আছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেয়া পদক্ষেপ সমূহের বিস্তারিত। 

 

এবার উল্লেখ করি তাঁর অর্জনগুলোঃ বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুসারে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১১৯ ডলার যা ভারত (১৩৪ ডলার) এবং পশ্চিম পাকিস্তানের (১৭৯ ডলার) চাইতে কম। মাত্র দুই বছরের মধ্যে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশকে ছাড়িয়ে হয়ে যায় ১৮২ ডলার যা ১৯৭৫ সালে হয় ২৭৮ ডলার। অর্থাৎ স্বাধীনতার মাত্র চার বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হয় ২.৩৪ গুণ। লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমানের সময় বাংলাদেশ আবার ভারত ও পাকিস্তানের থেকে মাথাপিছু আয়ের নিরিখে পিছিয়ে পড়ে। 

 

বিশ্ব ব্যাংকের দেয়া তথ্যানুসারে, ১৯৬০’র দশকে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৫.২ বছর। ১৯৭৪ সালে তা বেড়ে হয় ৪৯.২ শতাংশ এবং ৭৫ সালে ৫০.৩ শতাংশ। বঙ্গবন্ধুর সময়ে বাংলাদেশের গড় আয়ু বেড়ে যায় ৫ বছরের বেশি। ১৯৭২-৭৩ সালের ভিত্তি বছরের হিসেবে বাংলাদেশ স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইয়ার বুকে দেয়া তথ্যানুযায়ী, ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরে কৃষি উৎপাদন বাড়ে ১৩ শতাংশ। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ১৯৭৪-৭৫ সালে উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে বাড়েনি তবুও তা ১৯৭২-৭৩ অর্থ বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। ১৯৭৪-৭৫ সাল পর্যন্ত পশুসম্পদ এবং হাঁস-মুরগী উৎপাদন বেড়েছে ৩.৩ শতাংশ। ১৯৭৩-৭৪ সালে শিল্প উৎপাদন বেড়েছে ১৭.১ শতাংশ এবং ১৯৭৪-৭৫ সালে বেড়েছে ৬.৩২ শতাংশ। ১৯৭০-৭১ সালের তুলনায় ১৯৭৪-৭৫ সালে রফতানি বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। একই সময়ে রাজস্ব আয় বেড়েছে ৩০৭ শতাংশ এবং বাজেট বড় হয়েছে ১২৭ শতাংশ। 

 

শুধু বঙ্গবন্ধুর সময়েই নয় ১৯৯৬-০১ সালের সরকার এবং ২০০৯-২৪ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও দেশের উন্নতি হয়েছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই শুধু দেশের মানুষ ভাল থাকে, নিরাপদে থাকে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি হয়। অন্য কেউ এলেই উল্টে যায়। অতীতেও হয়েছে ২০২৪-২৫ এও তাই হল। বঙ্গবন্ধু কিছুই করেননি বা বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ ছিলেন না – এমন কথা অনেকেই বলেন না জেনে। তবে, বদরুদ্দীন উমরের মত জ্ঞানী ব্যক্তিরা এসব না জেনে নয়, জেনেশুনেই বলেন। তিনি এবং তার মত কথা বলা স্বাধীনতা বিরোধীরা সাধারণ মানুষকে বাহাত্তর সাল থেকেই বিভ্রান্ত করে চলছেন। তারা কখনোই দেশের জন্য কাজ করে জনগণকে সন্তুষ্ট করতে চাননি। বিভ্রান্ত করে আওয়ামী লীগের ভোট কমানোই তাদের একমাত্র পথ। তাদের উদ্দেশ্য একটিই – বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করা, দুর্বল করা, নিশ্চিহ্ন করা। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টসহ ২০ বার বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। বার বার চেষ্টা হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার। তারা পারেননি। 

 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সাধারণ মানুষ দুধ-ভাত না হলেও মাছ-ভাত পেয়েছে। এমনকি মাংস-ভাতের জন্য আন্দোলন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে না থাকলে কাজ থাকে না, পেটে টান পড়ে। আওয়ামী লীগের গুরুত্ব বোঝে সাধারণ মানুষ। তাই এ দলের প্রতি খেটে খাওয়া মানুষের সমর্থন অনেক গভীর। সামাজিক মাধ্যমে এখন প্রায় তাঁদের কথা শোনা যায়। প্রাণ দিয়ে তাঁরা ডাকেন তাঁদের প্রাণের নেত্রীকে। দু-চারজন জ্ঞানী বদরুদ্দীন উমর মিথ্যা বলে, কোটি কোটি মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধু আর তাঁর কন্যাকে মুছতে পারবেন না। এসব করে তারা শুধুই জনগণের মধ্যে বিভাজন বাড়ান, নিজেদের ঘৃণ্য করে তোলেন।  

সব খবর