সর্বশেষ

মতামত

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যে বৈষম্যমূলক ভ্যাট, সাধারণ মানুষের প্রতি রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতা

প্রকাশিত: ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯:০৫
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যে বৈষম্যমূলক ভ্যাট, সাধারণ মানুষের প্রতি রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতা

বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে এমন এক অবস্থার মুখোমুখি, যেখানে নীতি-নির্ধারণের দায়িত্ব কেবল বিদেশীদের চিন্তাভাবনা ও ফরমূলার ওপর নির্ভর করছে। অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা এবং দেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার ফল ভোগ করছেন সাধারণ মানুষ। 

 

সম্প্রতি এক উদাহরণ সামনে এসেছে বিশ্ব ব্যাংকের ফরমূলা অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য যেমন রুটি ও বিস্কুটের ওপর বাড়তি ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে, যা শুধু মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে কষ্টকর করছে না, বরং এটি বৈষম্যমূলক ও ন্যায়হীনও।

 

ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে, ইউনূস সরকারের নীতি অনুযায়ী দেশের প্রতিটি পণ্যের ওপর ভ্যাট চাপানো হচ্ছে, ফলে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা পূর্বে আমদানি শুল্কমুক্ত ছিল, তার ওপরও শুল্ক বসিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ানো হয়েছে। ফলস্বরূপ, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ রুটি বা বিস্কুটের মতো সহজলভ্য খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতে কষ্ট পাচ্ছে।

 

বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া এই পরিস্থিতিকে বৈষম্যমূলক ভ্যাট নীতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার কথায়, “আর কত ছোট হবে প্যাকেট? একসময় দেখা যাবে প্যাকেট আছে কিন্তু ভেতরে বিস্কুট নেই।” এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করছে, যে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এবং দৈনন্দিন চাহিদা আজ সরকারের নীতির শিকার হচ্ছে।

 

এই নীতি শুধু মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি করছে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। যেখানে নীতি-নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা, বাস্তবধর্মী বিশ্লেষণ এবং সাধারণ মানুষের চাহিদা বোঝার সক্ষমতা নেই, সেখানে অর্থনীতি কখনো স্থিতিশীল থাকতে পারবে না। তাই ন্যায্য ও মানবিক নীতি অনুসারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যে অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ করা উচিত নয়।

 

সাধারণ মানুষের জীবন-যাত্রা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং ক্রয়ক্ষমতা রক্ষা করা সরকারের প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত। নীতি-নির্ধারকরা যদি জনগণের বাস্তব সমস্যাকে উপেক্ষা করেন, তবে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামো দুইই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এখনই সময়, সরকারের উচিত মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে ন্যায্য ও মানবিক নীতি প্রণয়ন করা, যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দামের ওপর অযথা ভ্যাট আরোপ বন্ধ হয় এবং সাধারণ মানুষ সহজে সেগুলো ক্রয় করতে পারে।

সব খবর