২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনে ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হওয়া পাঁচটি সিনেপ্লেক্স—নারায়ণগঞ্জের গুলশান, সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেক্লাব, রাজশাহীর স্টার, নাটোরের আনন্দ এবং চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন—এক বছর পরও চালু হয়নি। এর মধ্যে তিনটি সংস্কার শেষ হলেও ভালো সিনেমার অভাব, ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা সংকটে হল খুলতে পারছেন না মালিকরা।
গুলশান সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “সংস্কার শেষ হলেও ভালো সিনেমা নেই। ঈদ ছাড়া ব্যবসা হয় না। সারা বছর লোকসানে হল চালানো সম্ভব নয়।”
চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনের পরিচালক ফারুক আহমেদ জানান, “কনটেন্ট সংকটে হল চালু করতে পারছি না। বছরে দুই ঈদের সিনেমা দুই সপ্তাহের বেশি চলে না। কর্মী, ভাড়া, ট্যাক্স—সব সামলানো কঠিন।”
সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেক্লাবের কর্ণধার সামিনা ইসলাম নী জানান, “প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সংস্কার শেষে সিনেমা না থাকায় হল চালু করা যাচ্ছে না। নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ‘বুক বিডি শো’ নামে একটি বক্স অফিস প্ল্যাটফর্ম চালু করতে চেয়েছিলাম, যা প্রযোজক ও হলমালিকদের জন্য স্বচ্ছ তথ্য সরবরাহ করত। কিন্তু ভাঙচুরের পর সেই প্রকল্প থেমে গেছে।”
রাজশাহীর স্টার সিনেপ্লেক্সের কার্যক্রমও অনিশ্চিত। মিডিয়া বিভাগের মেসবাহউদ্দিন আহমেদ জানান, “সরকারি জায়গায় নতুন প্রজেক্ট শুরু করতে সময় লাগবে। প্রক্রিয়া জটিল।”
নাটোরের আনন্দ সিনেপ্লেক্সের মালিক আনিসুর রহমান বলেন, “আর্থিক সংকটে সংস্কার সম্ভব হয়নি। মামলা করেও কোনো অগ্রগতি নেই।”
এদিকে আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও সিনেমা সংকটে বন্ধ রয়েছে মধুমিতা, মধুবনসহ বেশকিছু সিঙ্গেল স্ক্রিন। মধুমিতার কর্ণধার নওশাদ বলেন, “ঈদের পর দর্শক কমে গেছে, তাই হল বন্ধ রেখেছি।”
মধুবনের পরিচালক রোকনুজ্জামান ইউনূস জানান, “‘জ্বীন-৩’ চলছে, কিন্তু দর্শক নেই। ব্যবসা হচ্ছে না।”
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, “তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে হল সংস্কারের ঋণ প্রকল্পের সময়সীমা বাড়ানো, শিল্প হিসেবে চলচ্চিত্রকে ঘোষণা, বিদ্যুৎ বিল শিল্প হারে নির্ধারণসহ নানা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, বিদেশি সিনেমা আমদানি ও দেশীয় প্রোডাকশন বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও একটি বৈঠক ডাকা হবে।