দেশের সবচেয়ে বড় সিনেমা হল যশোরের ‘মণিহার’ ভেঙে ফেলার খবর চাউর হলেও সেটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন হলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “হল ভাঙা হচ্ছে না, সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে। সিনেমা খরায় আমরা বাধ্য হচ্ছি এই সিদ্ধান্ত নিতে।”
জিয়াউল ইসলাম জানান, ঈদকেন্দ্রিক সিনেমা ব্যবসা কিছুটা চললেও গত জুলাই থেকে নতুন কোনো সিনেমা না আসায় হল চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। “দুই ঈদে শাকিব খানের সিনেমা দিয়ে টুকটাক ব্যবসা করেছি। কিন্তু এরপর কোনো সিনেমা পাইনি। এইভাবে তো লস দিয়ে দিয়ে হল খোলা রাখা যায় না,”—বলেন তিনি।
হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে। একজন দর্শক থাকলেও, এক হাজার দর্শক থাকলেও বিদ্যুৎ বিল একই আসে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের পেছাতে হচ্ছে।”
তবে মণিহার কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, নতুন ভালো সিনেমা এলে আবারও হল চালু করা হবে। জিয়াউল ইসলাম বলেন, “ভারতীয় সিনেমা আমদানি বা ভালো কোনো সিনেমার আশ্বাস না পেলে এই সিনেমা হল চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।”
১৯৮৩ সালে সোহেল রানা ও সুচরিতা অভিনীত ‘জনি’ সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করে মণিহার। দেওয়ান নজরুল পরিচালিত এই সিনেমা দিয়ে যশোরবাসী পায় দেশের সবচেয়ে বড় সিনেমা হল, যার আসন সংখ্যা ১,২০০। গত বছর হলের পাশেই তৈরি করা হয় ৬৬ আসনের মণিহার মাল্টিপ্লেক্স।
মণিহার শুধু একটি সিনেমা হল নয়, এটি যশোরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। সিনেমা খাতের দুরবস্থায় এই হলের সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়া স্থানীয়দের জন্য এক ধরনের বেদনার বিষয়। তবে নতুন সিনেমা ও বিনোদন উদ্যোগ এলে আবারও প্রাণ ফিরে পেতে পারে মণিহার।
হল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা এখনো আশাবাদী—ভালো কনটেন্ট এলে দর্শক ফিরবে, আর মণিহার আবারও আলোয় ঝলমল করবে।